আন্তর্জাতিক

যা আছে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে

ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বৈশ্বিক জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ১৯৫টি দেশ গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনতে যে ঐক্যমত্য পোষণ করেছে তাকে অনেক পর্যবেক্ষকই ‘ঐতিহাসিক অর্জন’ বলে উল্লেখ করছেন। খবর বিবিসির।১৯৯৭ সালের কিয়োটো প্রটোকলে হাতে গোনা কয়েকটি দেশকে ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণ ঠেকানোর লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়। কিন্তু সেই প্রটোকল থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। বাকিরাও লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীতে আসন্ন বিপজ্জনক জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই কার্যকর করতে হবে।বিশ্বকে বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ এই চুক্তিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে আনা; গাছ, মাটি ও সমুদ্র প্রাকৃতিকভাবে যতটা শোষণ করতে পারে ২০৫০ সাল থেকে ২১০০ সালের মধ্যে কৃত্রিমভাবে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ সেই পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। প্রতি ৫ বছর অন্তর ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণ রোধে প্রত্যেকটি দেশের ভূমিকা পর্যালোচনা করা ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে গরিব দেশগুলোকে ধনী দেশগুলোর ‘জলবায়ু তহবিল’ দিয়ে সাহায্য করা।তবে চুক্তি বাস্তবায়নে অর্থ সঙ্কট বাধা হতে পারে কিনা সে নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। প্যারিসের দর কষাকষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে অর্থের যোগান। উন্নয়নশীল দেশগুলোর দাবি, জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহার বাদ দিয়ে সরাসরি নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে যেতে তাদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রয়োজন।২০২০ সাল নাগাদ এ খাতে বছরে একশ বিলিয়ন ডলারের যে প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাচ্ছে তাতে সন্তুষ্ট নয় অনেক দেশই। চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হলে ২০২০ সালের পরেও বছরে একশ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলে মনে করছে তারা।ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ড. ইলান কেলম্যান বলেন, আর্থিক সহায়তার সংক্ষিপ্ত সময়সীমা উদ্বেগের কারণ। শুধু হিসেবে বছরে একশ বিলিয়নের তহবিল বেশ কাজে দেবে। তবে সেটা এখনো বিশ্বজুড়ে সামরিক খাতে প্রতিশ্রুত অর্থসাহায্যের তুলনায় ৮ শতাংশেরও নিচে।গত ৩০ নভেম্বর ১৯৫টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে প্যারিসে জাতিসংঘের ২১তম জলবায়ু সম্মেলন শুরু হয়। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে পৌঁছাতে দুই সপ্তাহ ধরে আলোচনার পর শনিবার চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বিশ্ব নেতারা।এসআইএস/এমএস

Advertisement