রাজধানীর ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের সময় এ হট্টগোল বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে বেগ পেতে হয়েছে।
Advertisement
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের আড়াই হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা বা এক বস্তা করে চাল দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে মাত্র পাঁচ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছিল। পাঁচ কেজি চালের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। বিতরণ কার্যক্রমে কোনো শৃঙ্খলা এবং স্বাস্থ্যবিধিও মানা হয়নি। এছাড়া যে চাল দেয়া হয়েছে, তার মানও ভালো নয়। তাই প্রতিবাদে শ্রমিকরা বিক্ষোভ এবং চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছেন।
ডিএসসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার সময়ে মানবিক দিক বিবেচনা করে ডিএসসিসি মালিকানাধীন বাস টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে চাল বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে অনুযায়ী গত সোমবার (২ আগস্ট) সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ৫০ টন চাল বিতরণ করা হয়। আজ বুধবার ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালে ওই এলাকার শ্রমিকদের মাঝে ৫০ টন চাল দিতে গেলে এই বিপত্তি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং শ্রমিকেরা জানান, বেলা ১১টায় ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালের শ্রমিকদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের কথা ছিল। তবে ত্রাণ নিতে সকাল সাতটা থেকেই শ্রমিকেরা লাইনে দাঁড়ান। বেলা ১১টার দিকে টার্মিনালে ত্রাণ দিতে যান মেয়র তাপস। এ সময় ত্রাণের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন পরিবহন শ্রমিকেরা। কার আগে কে ত্রাণ নেবেন এ নিয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তাদের মধ্যে শ্রমিক নন, এমন লোকজনও ছিলেন। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থা দেখে কয়েকজনকে দিয়েই ফিরে যান ডিএসসিসি মেয়র। অন্যদিকে শ্রমিকদের একাংশ পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
Advertisement
ডেমরার বাসা থেকে সকাল সাতটায় ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালে চান আনতে যান পরিবহন শ্রমিক শরিফুল আলম। তিনি বলেন, লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ। ১২০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে সেখানে যাই। কিন্তু দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাউকে চাল দেয়া হয়নি। যে কয়েকজন পাঁচ কেজি করে চাল পেয়েছেন, সেগুলোও নিন্মমানের। ডিএসসিসি ত্রাণের নামে এই ধরনের হয়রানি করার কোনো মানে হয় না।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের জাগো নিউজকে বলেন, ফুলবাড়িয়া এবং গুলিস্তানের শ্রমিকদের জন্য ৫০ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে ডিএসসিসি। এই চাল পরিবহন শ্রমিক নেতাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা প্রতিজনকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার কথা। কিন্তু তারা কী পরিমাণ দিয়েছেন, তারাই বলতে পারবেন।
তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পরিবহন শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমএমএ/এমআরআর/এমএস
Advertisement