বিশেষ প্রতিবেদন

নতুন প্রজন্মের পুলিশিং উপভোগ করছি

একসময় পুলিশের যে অফিসার টাইপরাইটার চালাতে পারতো তার কদর থাকতো সবার চেয়ে একটু বেশি। তবে এখন যুগ বদলেছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ঘরে ঘরে পৌঁছেছে ইন্টারনেট, হাতের মুঠোয় পুরো পৃথিবী।যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক হয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ বিভাগ। সুযোগ হচ্ছে তরুণদের। উদ্যোমী আর উদ্ভাবনী এসব তরুণদের সঙ্গে কাজ করে নতুন অনেক কিছু শিখছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও। নতুন প্রজন্মকে স্বাগত জানিয়ে তাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।তেমনি একজন রাজধানীর ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আযম মিয়া। জাগো নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বর্তমান নতুন প্রজন্মের পুলিশ শিক্ষিত ও স্মার্ট। যুগোপযোগী এসব অফিসারদের সঙ্গে কাজ করে ভালো লাগছে। খুব উপভোগ করছি।’ওসি বলেন, ‘আগে পুলিশ সম্পর্কে অনেকেরই নেতিবাচক ধারণা ছিল। তবে নতুন প্রজন্মের পুলিশ সদস্যদের কারণে এই ধারণা বদলাচ্ছে। গতানুগতিক পুলিশিংয়ের বাইরে গিয়ে তরুণেরা নানা সামজিক কর্মকাণ্ডে নিজেদের নিয়োজিত করছে। তরুণ এই অফিসারদের সেবায় সবাই সন্তোষ প্রকাশ করছেন। পুলিশের প্রতি জনগণের ভীতি দূর হওয়ার পেছনে সিংহভাগ কৃতিত্ব তরুণ পুলিশ সদস্যদের।’ধানমন্ডি থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে।’নুরে আযম মিয়া দাবি করেন, ধানমন্ডি থানা এলাকায় মাদকের নির্দিষ্ট কোনো আস্তানা নেই। অনেকবার আস্তানা তৈরির চেষ্টা করলেও পুলিশের কঠোর নজরদারিতে মাদক ব্যবসায়ীরা সবসময়ই ব্যর্থ হয়েছে। এলাকায় ছিনতাইও অনেকাংশে কমেছে।তবে শুধু পুলিশ নয়, এসব অপরাধ কমানোর কৃতিত্বের অংশীদার জনগণও- এমনটিই মনে করেন তিনি। ওসি বলেন, অপরাধ দমনে ধানমন্ডি থানার পক্ষ থেকে নানা সচেতনামূলক সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে বসে তাদের সমস্যা শুনে তা সমাধানে কাজ করা হচ্ছে।নুরে আযম মিয়া বলেন, একসময় জনগণের প্রথাগত ধারণা ছিল যে ‘পুলিশ মানেই খারাপ’। তবে পুলিশের জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে জনগণ এমন ধারণা বদলাতে শুরু করেছে। সাধারণ জনগণ এখন পুলিশকে ভয় না পেয়ে সমাজের অপরাধ দমনে সহাযোগিতা করছেন। এছাড়াও ধানমন্ডি এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ভালো হওয়ায় এই এলাকায় চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজির ঘটনাও অনেক কম।তবে রাজধানীর অন্যান্য এলাকার মতো এখানেও রয়েছে নানা সমস্যা। এর মধ্যে ‘যানজটকেই’ এই এলাকার প্রধান সমস্যা বলে দাবি করলেন ওসি। তিনি বলেন, ‘ধানমন্ডিতে বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং অসংখ্য ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল রয়েছে। সব ব্যাংকের ব্রাঞ্চ অফিসের পাশাপাশি রয়েছে বড় বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান। আর এ কারণে পিক আওয়ারে এখানে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ধানমন্ডিতে যানজটের চেয়ে বড় সমস্যা আপাতত নেই।’তবে ওসি এও বলেন, যানজট নিরাসনে মূল ভূমিকা পালন করে ট্রাফিক পুলিশ। তবে ধানমন্ডি থানা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশও ট্রাফিক বিভাগকে নিয়মিত সহযোগিতা করে থাকে।কেমন ধানমন্ডি গড়ে তুলতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবে নুরে আযম মিয়া বলেন, ‘ধানমন্ডিকে সব ধরনের অপরাধমুক্ত একটি আদর্শ থানা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। গত ১৫ বছর দেশের বিভিন্ন এলাকায় জনগণের সেবায় দায়িত্ব পালন করেছি। ভবিষ্যতেও সততা, ন্যায়-নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের সেবা করে যেতে চাই।’এআর/এসএইচএস/একে/বিএ

Advertisement