জাতীয়

কঠোর বিধিনিষেধ যেন ‘অনেকটাই শিথিল’

দেশে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের (লকডাউন) আজ ১১তম দিন চলছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ পালিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু গতকাল (১ আগস্ট) থেকে গার্মেন্টসসহ রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ায় এই লকডাউন এখন অনেকটাই শিথিল হতে শুরু করেছে।

Advertisement

গত ২৩ জুলাই লকডাউন শুরু হওয়ার পর কয়েকদিন রাজধানীসহ সারাদেশে লকডাউন প্রতিপালনে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে অপ্রয়োজনে রাস্তায় বের হওয়া যানবাহন ঠেকাতে চেকপোস্টে কড়া তল্লাশি কার্যক্রম চলছিল। এ সময় অপ্রয়োজনে বাইরে বের হওয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের অভিযোগে অসংখ্য মানুষকে আটক ও জরিমানা করা হয়। তবে গতকাল থেকে কিছু কারখানা খোলার পরিপ্রেক্ষিতে চলমান লকডাউন অনেকটা শিথিল চলে আসে।

সোমবার (২ আগস্ট) সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ রাস্তাঘাটে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। সংখ্যায় কম হলেও বাস ও সিএনজিসহ বেশকিছু গণপরিবহনও চোখে পড়েছে। লকডাউনের কারণে এতদিন রাস্তাঘাটে মানুষের যাতায়াত সীমিত থাকলেও গতকাল থেকে রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতিও বেশ বেড়েছে।

ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, যেসব পয়েন্টে পুলিশের অপরাধ বিভাগ ও ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্ট বসিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল সেগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। যানবাহন তল্লাশিতেও আগের মতো কড়াকড়িও নেই। রাস্তাঘাটে যারা বের হয়েছেন তারা প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। অধিকাংশ মানুষ সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করছেন না।

Advertisement

হঠাৎ করে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কারণে লকডাউনের লাগাম ধরে রাখা যাচ্ছে না। গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে লাখ লাখ মানুষ কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ায় তারা কর্মস্থলে যাচ্ছেন। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ছে।

করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য বিএসএমএমইউয়ের সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডাক্তার নজরুল ইসলাম বারবার বলছেন, তথাকথিত এই লকডাউন দিয়ে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু রোধ করা যাবে না। যেকোনো মূল্যে শতভাগ মানুষকে মাস্ক পরিধান করাতে হবে। প্রয়োজনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।

এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রোববার (১ আগস্ট) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে বক্তব্যকালে বলেন, গার্মেন্টসসহ রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান মালিকরা তাদের জন্য লকডাউন শিথিল করার ব্যাপারে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা ভঙ্গ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদনে তারা বলেছিলেন, ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত কেবল রাজধানী ও এর আশেপাশের এলাকার প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা থাকবে। কিন্তু তারা ঢাকার বাইরে থেকে শ্রমিকদের ডেকে এনে সংক্রমণের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

এমইউ/এমআরআর/জেআইএম

Advertisement