স্বাস্থ্য

১ ডলার বাজেট বৃদ্ধি রোধ করবে ১০ ডলারের ক্ষতি

স্বাস্থ্যখাতে এক ডলার বাজেট বৃদ্ধি ১০ ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। প্রতি বছর জাতীয় মোট বাজেটের কমপক্ষে শতকরা ১ ভাগ অতিরিক্ত অর্থ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। বাজেট বৃদ্ধি না পেলে দেশে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা দুরূহ হয়ে পড়বে। শনিবার রাজধানীর রেডিসন হোটেলে বিশ্ব সার্বজনীন দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট আয়োজিত ‘ইনিসিয়েটিভস ফর ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে দেশি-বিদেশি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ মন্তব্য করেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, স্বাস্থ্যখাতে মোট ব্যয়ের শতকরা ৬৩ ভাগ এখনো মানুষের পকেট থেকে খরচ হচ্ছে। জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে শতকরা ১৫ ভাগ মানুষ সঞ্চিত টাকা পয়সা খরচ, বিক্রি ও ঋণ করে অর্থনৈতিক দুর্যোগে পড়ছেন। ফলে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য বীমাসহ বিভিন্ন উপায়ে অর্থ তহবিল সৃষ্টি করতে না পারলে দিনকে দিনকে স্বাস্থ্যসেবা খরচ আরো বৃদ্ধি পাবে। স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন; স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব আসাদুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের প্রতিনিধি ড. পারিনিথারান প্রমুখ। মূল প্রবন্ধে মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবায় প্রতি বছর সাত ট্রিলিয়ন ডলারের খরচ বাড়ছে। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতি বছর ১০০ মিলিয়ন মানুষ দরিদ্র হচ্ছে। ইউজার ফি ও অন্যান্য পদ্ধতি সঠিকভাবে কাজ করছেনা। অসমতা ও বিশ্বাসহীনতার কারণে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ধনীদের তুলনায় দরিদ্ররা তুলনামূলকভাবে কম সেবা পাচ্ছে।তিনি বলেন, বাংলাদেশ সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত  করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০১৭ সাল থেকে পরবর্তী যে স্বাস্থ্য সেক্টর কর্মসূচি শুরু হচ্ছে সেখানেও সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি গুরত্ব পেয়েছে। সরকারের ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতেই স্বাস্থ্য বিষয়টির ওপর গুরত্বারোপ করা হয়েছে। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক বলেন, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দরিদ্রদের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে। সহস্রব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের টার্গেট পূরণসহ সঠিক পথে রয়েছে। সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতেও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে মন্তব্য করেন।স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বাস্থ্যখাতে তহবিল করতে বিভিন্ন পণ্যের ওপর স্বাস্থ্যকর নিরূপণ করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশের প্রতিনিধি ড. পারিনিথারান বলেন, বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন এখন উন্নত দেশের সাথে তুলনা হচ্ছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ও সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেব সুনিশ্চিত করতে মোট জাতীয় বাজেটের শতকরা এক ভাগ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যখাতে এক ডলার বরাদ্দ ১০ ডলারের অথনৈতিক ক্ষতিসাধন থেকে রক্ষা করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।এমইউ/এসএইচএস

Advertisement