দেশে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণকারীর ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এছাড়া যারা আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে পাওয়া গেছে তুলনামূলকভাবে বেশি অ্যান্টিবডি।
Advertisement
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা গ্রহণকারী ২০৯ জনের মধ্যে পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য ওঠে আসে।
গবেষণার প্রধান গবেষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ সোমবার (২ আগস্ট) এ তথ্য জানান।
‘হেমাটোলজিক্যাল অ্যান্ড অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট আফটার ভ্যাকসিনেশন অ্যাগেইনস্ট সার্স-কোভিড-২’ শিরোনামে এ গবেষণা হয়।
Advertisement
গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত করোনার টিকা গ্রহণকারীদের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং অর্ধেকের বেশি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩১ শতাংশের আগে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে।
উপাচার্য বলেন, ‘এ গবেষণা থেকে প্রমাণ পাওয়া গেছে বাংলাদেশের জনগণের ওপর টিকা প্রয়োগের পর কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরির।’
এছাড়া অ্যান্টিবডির উপস্থিতির পরিবর্তন এবং নতুন অন্যান্য টিকার অ্যান্টিবডি তৈরির কার্যক্ষমতা পর্যালোচনার জন্য আরও গবেষণা করা হবে বলে জানান বিএসএমএমইউ উপাচার্য।
তিনি বলেন, ‘প্রথম ডোজ নেয়ার তিন-চার মাস পর দ্বিতীয় ডোজ নিলে কী পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয় সে বিষয়েও গবেষণা করা হবে।’
Advertisement
গবেষণার বিষয়ে বিএসএমএমইউ উপাচার্য জানান, এতে অংশগ্রহণকারীর অর্ধেকেরও বেশি আগে থেকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানিসহ অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। এ ধরনের রোগের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিকা নেয়ার পর অ্যান্টিবডি তৈরিতে কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি।
এছাড়া টিকা গ্রহণের পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে সামান্য জ্বরসহ মৃদু উপসর্গের কথা জানিয়েছেন গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ৪২ শতাংশ মানুষ। রক্ত জমাট বাঁধা বা এরকম অন্য কোনো জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গবেষণার সময় দেখা যায়নি। বিএসএমএমইউ উপাচার্য ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আতঙ্কিত না হয়ে করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হবে। টিকা নিলে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুঝুঁকি একেবারেই কম।’
এ গবেষণা কার্যক্রমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ সহ-গবেষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
এমইউ/জেডএইচ/এএসএম