নামাজ শারিরীক ও আত্মিক ইবাদাত। ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে নামাজ পড়তে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন। নামাজসহ ইবাদাত বন্দেগিতে যখন ক্লান্তি চলে আসবে তখন বিশ্রাম গ্রহণ করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বয়ং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি বলেন-হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার মসজিদে প্রবেশ করে দেখতে পেলেন, একটি রশি দুটো খুটির মাঝখানে বাঁধা আছে। তিনি বললেন: এ রশিটা কিসের জন্য? সাহাবিগণ বললেন, এটা যয়নবের রশি। তিনি যখন নামাজ পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তখন এ রশিতে ঝুলে থাকেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: এটা খুলে ফেল। তোমাদের প্রত্যেকের উচিত উদ্যম সহকারে নামাজ পড়া। আর যখন ক্লান্ত হয়ে যাবে তখন ঘুমিয়ে পড়বে। (বুখারি ও মুসলিম)হাদিসের শিক্ষাএক. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতকে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের নির্দেশ দিলেন ও কঠোরতা পরিহার করতে বললেন। মধ্যমপন্থা অবলম্বন না করে নিজের প্রতি কঠোরতা আরোপ করার একটি দৃষ্টান্ত রয়েছে এ হাদিসে। উম্মুল মুমিনীন হজরত যয়নব রাদিয়াল্লাহু আনহা নিজের নিদ্রাভাব দূর করার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন। যাতে তিনি বেশি করে নামাজ আদায়ে সক্ষম হন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার এ কাজকে অনুমোদন দেননি।দুই. যখন কারো নিদ্রা আসে তখন নিদ্রা যাওয়াটা হল তার কর্তব্য। নফল নামাজের জন্য নিজেকে এতটা কষ্ট দেয়া ঠিক নয়।তিন. আমরা অনেককে দেখি নামাজের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে যান তারপরও নামাজ অব্যাহত রাখেন। এরূপ করাটা ঠিক নয়। ঘুমের ঘোরে নামাজ, প্রার্থনা বা ইবাদাত-বন্দেগি করতে নিষেধ করা হয়েছে।চার. নামাজ পড়তে পড়তে যখন ঘুম চলে আসে, তখন মুমিন বান্দার ঘুমাও নামাজের ন্যায় ইবাদাতের শামিল।পরিশেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ উচিত, নামাজসহ সকল ইবাদাতে প্রাণচাঞ্চল্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে এগিয়ে আসা। নামাজে একাগ্রতা অবলম্বন করার মাধ্যমেই বান্দার সঙ্গে মাওলার সম্পর্ক সুদৃঢ় করা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিখানো পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/আরআইপি
Advertisement