ক্রিকেটকে বাঁচাতে আবারও মাঠে নামলেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান। বর্তমানে রাজনীতিবীদ, পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের প্রধান ইমরান খান ভারতে গেলেন এজেন্ডা আজটাক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। সেখানে গিয়েই তিনি দেখা করণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। একমাত্র উদ্দেশ্যে পাকিস্তান-ভারত সিরিজে যেন ‘হ্যাঁ’ বলে দেন ভারত প্রধানমন্ত্রী।পাকিস্তান-ভারতের মাঝে ক্রিকেট সিরিজ শুধু নিছক একটি খেলাই নয়, দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কের একটা সেতুবন্ধনও বটে। সামাজিক-রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে দু’দেশের মধ্যকার ক্রিকেট সিরিজ।অথচ, সেই ক্রিকেটীয় সম্পর্কটাই কি না টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর থেকে। মাঝে (২০১১ বিশ্বকাপের পর) ভারতে গিয়ে একটি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে পাকিস্তান। কিন্তু বন্ধ রয়েছে টেস্ট সিরিজ।দু’দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক যেন পূনরায়, নির্বিঘ্নে চালু করা যায়, সে লক্ষ্যেই গত বছর দু’দেশের মধ্যে একটি এমওইউ (মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং) স্বাক্ষরিত হয়। যে এমওইউর অধীনে দু’দেশই পরস্পরের বিপক্ষে প্রতিবছর সিরিজ খেলার কথা। সে অনুযায় এবার ছিল পাকিস্তানের হোম সিরিজ। অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আরব আমিরাতে। কিন্তু পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে সন্ত্রাসী হামলার কারণে, ভারত সিরিজটি খেলতে অনীহা প্রকাশ শুরু করে।এ নিয়েই নানা ঘটন-অঘটন চলে আসছিল কয়েকমাস ধরে। পাকিস্তান একদিনে টানা চেষ্টা করে যাচ্ছে সিরিজটি আয়োজনের। অপরদিকে ভারত চেষ্টা করছে সিরিজ থেকে বিরত থাকার। এ নিয়ে দু’দেশের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে অনেকগুলো আলোচনও ভেস্তে যায়। শেষ পর্যন্ত বিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহরের উদ্যোগে শ্রীলংকাতেই সিরিজটি আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে মতে পাকিস্তান সরকার অনুমতি দিয়ে দিলেও, ভারত সরকার এখনও পর্যন্ত ঝুলিয়ে রেখেছে বিষয়টি। এখন এ সিরিজের বল পুরোপুরি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কোর্টে।এমনই এক পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করলেন ইমরান। বললেন, ‘ভারত-পাক সিরিজ হওয়া উচিত!’শুনে না কি মোদি হেসেছেন। বিষয়টা আজটাক অনুষ্ঠানে ইমরান খান নিজেই বলেছেন,‘মোদীজি শুনে হাসলেন। বুঝলাম না, ওটা হ্যাঁ নাকি না। তবে আমি পজিটিভ লোক। পজিটিভ ভাবেই ব্যাপারটাকে দেখতে চাইব।’ বর্ণবাদের কারণে একসময় দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিলেন ইমরান। সে প্রসঙ্গও তুলে আনলেন তিনি। বললেন, “আমি এক সময় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করাটা সমর্থন করেছিলাম। তবে, সেটা বর্ণবৈষম্য নিয়ে ওদের মনোভাবের জন্য। ওখানে তো মানুষের অধিকারকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছিল; কিন্তু ওটা বাদ দিলে আমি সব সময় মনে করে এসেছি যে, খেলাধুলো কখনও বন্ধ থাকা উচিত নয়। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করতে হলে, যোগাযোগ বাড়াতে হলে তো এটাই প্রয়োজন। শচিন টেন্ডুলকারকে পাকিস্তান কম ভালবাসে না। আবার ওয়াসিম আক্রমকে ভারতও অসম্ভব ভালবাসে।”আইএইচএস/আরআইপি
Advertisement