‘কেমন আর থাকুম। আগে প্রতিদিন দেড় হাজার পিসের বেশি আইসক্রিম বেচতাম আর আইজ বেচছি মাত্র ৩০টা। করোনার কারণে পরিবার-পরিজন লইয়া খাইয়া না খাইয়া দিন কাটাইতাছি।’
Advertisement
বুধবার (২৮ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে মধ্যবয়সী একজন আইসক্রিম বিক্রেতাকে কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করতেই এসব কথা বলছিলেন।
এসএম হল থেকে সামনে এগিয়ে উদয়ন স্কুলের বিপরীতে একটি বটগাছের তলায় চুপচাপ একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরনে লুঙ্গি, ফুলহাতা শার্ট, পায়ে স্যান্ডেল ও মুখে মাস্ক। চার চাকার ঠেলাগাড়িতে নিউ ঈগল নামে আইসক্রিমের বাক্স নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। বাক্সে বিভিন্ন রংয়ের আইসক্রিমের ছবি দিয়ে লেখা- লেমন, অরেঞ্জ, বাদামি, চকবার, মালাই ও নারিকেল আইসক্রিম।
আলাপকালে জানা গেল তার নাম মনোয়ার উদ্দিন মাতবর। তিনি জিনজিরার একটি আইসক্রিম কারখানা থেকে আইসক্রিম এনে বিক্রি করেন। তিনি জানান, করোনাকালে স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।
Advertisement
মনোয়ার উদ্দিন বলেন, ‘লকডাউনের আগে স্কুল কলেজ খোলা ছিল, রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড় থাকত। খুব গরম পড়ত। মানুষ গরমে পাগলা অইয়া আইসক্রিম খাইতো। বিশেষ করে স্কুল ছুটি অইলে উদয়ন ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুলের ছোট বাচ্চারা একেকজন দুই তিনটা কইরা আইসক্রিম খাইত।’
তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার পিস আইসক্রিম বেচা শেষ অইতো। দৈনিক ৮০০ টাকা থাইক্যা এক হাজার টাকা লাভ অইতো। এখন সেই মানুষজনও নাই, বেচা-বিক্রিও নাই। বিশেষ করে লকডাউনের কারণে রাস্তায় মানুষজন কম বের হওয়ায় আইসক্রিমের বেচা-কেনা অনেক কমে গেছে।’
মনোয়ার মাতবর জানান, গত কয়েকদিন ধরে বেচা-কেনা খুবই কম। বৃষ্টির কারণে গরমও কম। গরম না পড়ায় আইসক্রিম বেচা-কেনা কমে গেছে। আজ ১০০ আইসক্রিম এনেছিলেন। দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৩০টা আইসক্রিম বিক্রি হয়েছে। পাঁচ টাকা ও ১০ টাকা দামের একটা আইসক্রিম বেচলে আর কত লাভ হয়। এ আয় দিয়ে সংসার আর কতদিন চলবে সে চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না বলে জানান তিনি।
এমইউ/এএএইচ
Advertisement