কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে টেলিভিশন মেরামত করতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় গিয়েছিলেন সজীব আহমেদ। টেলিভিশন মেরামত করে বাসায় ফেরার পথে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন তিনি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এক হাজার টাকা জরিমানা করেন।
Advertisement
বুধবার (২৮ জুলাই) চলমান বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। আদালত পরিচালনা করছেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ যানবাহন নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছেন কি-না, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষ রাস্তায় চলাচল করছে কি-না তা কঠোরভাবে মনিটরিং করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় সন্তোষজনক জবাব না পেলে যানবাহন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
টেলিভিশন মেরামত করতে গিয়ে জরিমানা দেয়ার পর সজীব আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘গতকাল থেকে হঠাৎ টেলিভিশনটি নষ্ট হয়ে যায়। লকডাউনে বাসায় টেলিভিশন ছাড়া সময় না কাটার কারণে আজ সকালে মেরামত করতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু পথে র্যাব এক হাজার টাকা জরিমানা করল।’
Advertisement
শুধু সজীব আহমেদই নন, সরকারঘোষিত এই কঠোর লকডাউনে কলা কিনতে বের হয়ে ২০০ টাকা জরিমানা দিয়েছেন আব্দুল কাদের। তিনি থাকেন মতিঝিলের রেললাইন এলাকায়। রিকশা নিয়ে পল্টন থেকে কলা কিনে বাসায় ফেরার পথে জরিমানা গুনতে হয় তাকে।
তানভীর সুমন নামে একজন অনলাইন শপে কাজ করেন। বিধিনিষেধের মধ্যে বের হলেও তার কাছে ছিল না কোনো পরিচয়পত্র। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে জরিমানা করেন ৫০০ টাকা।
এছাড়া অনেকেই বিনা কারণে বাইরে বের হয়ে ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় মোট ১৮ জনকে বিভিন্ন অঙ্কে প্রায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনায় কঠোর লকডাউন চলছে। এ সময় অত্যাবশ্যক প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সরকার যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে তা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি জীবিকা নিশ্চিত করার জন্য। হয়তো লকডাউনের কারণে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু এটার দীর্ঘমেয়াদি ফল রয়েছে। ব্যক্তি-পরিবার, সমাজ, দেশকে করোনা থেকে সুরক্ষার দিকটা বিবেচনায় আমরা কঠোরভাবে সরকারি বিধিনিষেধ পালনের চেষ্টা করছি।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি বিধিনিষেধ পালনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। পূর্বের চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে অত্যধিক সাড়া মিলেছে। একান্তই জরুরি ও অত্যাবশ্যক কারণ ছাড়া বা বিধিনিষেধের নির্দেশনার আওতার বাইরে যারা রয়েছেন তারা শুধু বের হতে পারছেন। এর বাইরে আমরা কিন্তু চেকপোস্ট বসিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি, যাদের কারণ যথোপযুক্ত মনে হচ্ছে না তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে, জরিমানাও করা হয়।’
টিটি/এমএসএম/এমআরআর/এএসএম