আন্তর্জাতিক

মালয়েশিয়ায় একদিনে দুই শতাধিক মৃত্যু, শনাক্ত ১৪৮৪০

মালয়েশিয়ায় একদিনে করোনায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে দেশটিতে জুলাইয়ের পর থাকছে না লকডাউন বা জরুরি অবস্থা। ১ আগস্ট থেকে লকডাউন ও জরুরি অবস্থা শিথিল করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

Advertisement

সোমবার (২৬ জুলাই) দেশটির পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে এ তথ্য জানান আইনমন্ত্রী তাকিউদ্দিন হাসান। ৩১ জুলাইয়ের পর লকডাউন ও জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের এ দেশটিতে গত জুন মাসের শেষ দিক থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ১ জুলাই থেকে মাসব্যাপী লকডাউন ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে দেশটির সরকার; যার মেয়াদ ৩১ জুলাই শেষ হতে যাচ্ছে।

কিন্তু লকডাউন ও জরুরি অবস্থা জারি থাকা সত্ত্বেও সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এসেছে এমন বলার উপায় নেই। মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ অতিক্রম করেছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১০ লাখ ২৭ হাজার ৯৫৪ জন। বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগী আছেন এক লাখ ৬৫ হাজার ৯০৩ জন।

Advertisement

এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৮৪০ জন। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ২০৭ জনের। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট হাজার ২০১ জনে।

এর আগের দিন রোববার ১৭ হাজার ৪৫ জন আক্রান্ত হয়েছিল, যা মহামারি শুরুর পর মালয়েশিয়ায় একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড

এ পরিস্থিতিতে লকডাউন ও জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্তই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু কেন তা হলো না সেজন্য সম্ভাব্য দুটি কারণকে দায়ী বলে মনে করছেন দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

প্রথম কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, দীর্ঘ এক মাসের লকডাউনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়ায় দেশের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ তৈরি হয়েছে দেশটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং শ্রমিকদের মধ্যে। লকডাউন ও জরুরি অবস্থার মেয়াদ আবার বৃদ্ধি করা হলে এই ক্ষোভ আরও বাড়বে এবং সরকার এ বিষয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না।

Advertisement

দ্বিতীয়ত, মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টারি রাজনীতিতে চলমান অস্থিরতা। ২০২০ সালের মার্চে পার্লামেন্টে একদমই অল্প ভোটের ব্যবধানে দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। জোটের অন্যতম শরিক এবং মালয়েশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ইউএমএনও পার্টি চলতি মাসের শুরুর দিকে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এ নিয়ে কিছুটা অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে দেশটির সরকারে।

মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ পরিস্থিতিতে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের আয়োজন করতে হবে। যদি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন সেই ভোটে জিততে পারেন, তবেই তিনি এবং তার মন্ত্রিসভার সব সদস্য সুরক্ষিত থাকবেন। তবে আস্থা ভোট কবে নাগাদ আয়োজন করা যেতে পারে, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো গৃহীত হয়নি।

এদিকে, শুরু হওয়া পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন চলবে আরও পাঁচ দিন।

এআরএ/এএসএম