জাতীয়

দুপুরে বিআরটিএর সেবা চালুর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাতে বাতিল, জনভোগান্তি

ঈদের ছুটি শেষে আজ থেকে সীমিত পরিসরে সেবা কার্যক্রম চালু করার কথা ছিল বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ)। রোববার (২৫ জুলাই) দুপুরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেবা কার্যক্রম চালুর কথা জানানো হয়।

Advertisement

তবে ওইদিন রাতেই আবার সিদ্ধান্ত বদল করে কর্তৃপক্ষ। বিআরটিএ-এর ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেবা কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।

বিআরটিএ পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় সীমিত পরিসরে বিআরটিএ-এর কার্যক্রম চালুর আগের আদেশ বাতিল করা হলো।

তবে রোববার দুপুরে দেয়া বিজ্ঞপ্তির তথ্য জেনে সোমবার (২৬ জুলাই) সকাল থেকে বিআরটিএ অফিসের সামনে ভিড় করেন সেবাগ্রহীতারা।

Advertisement

সোমবার সকালে মিরপুর-১৩ নম্বরের বিআরটিএ কার্যালয়ে গিয়ে গেট বন্ধ দেখা গেছে। সেখানে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে দুপুরের সিদ্ধান্ত রাতে পরিবর্তন করায় সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন মানুষ। তারা এমন সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে ক্ষোভ জানান।

গেটে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা একজন আনসার সদস্য জানান, ঈদের ছুটি শুরুর পর থেকে বিআরটিএ-এর সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রোববার রাতে হঠাৎ কার্যক্রম চালু না করার সিদ্ধান্ত হয়।

তবে এ বিষয়ে জানতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

এর আগে রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সীমিত পরিসরে সোমবার (২৬ জুলাই) থেকে বিআরটিএ-এর সেবা কার্যক্রম চালু হবে।

Advertisement

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৬ জুলাই থেকে শুধু জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় বিআরটিএ-এর বিভিন্ন মেট্রো ও জেলা সার্কেল অফিস থেকে মোটরযান রেজিস্ট্রেশন এবং বিভিন্ন অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ যেমন- রুট পারমিট সনদ নবায়ন, অস্থায়ী মোটরযান চালনার অনুমতিপত্রের মেয়াদ, মালিকানা বদলের আবেদন, মোটরযান রেজিস্ট্রেশন সনদপ্রাপ্তি কার্যক্রমের মেয়াদ বর্ধিতকরণ চালু থাকবে।

এদিকে, সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিআরটিএ কার্যালয়ে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবাগ্রহীতারা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাইফ জানান, গতকাল একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল। সেখান থেকে জানলাম আজকে বিআরটিএ অফিস খোলা। কিন্তু এসে দেখি সব বন্ধ। লাইসেন্সের জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট দেব, সেটার তারিখ ছিল আজকে। আমার টাকা দেয়া হয়েছে। এখন আবার নতুন করে তারিখ নিতে হবে।

ভাড়ায় মাইক্রোবাস চালান পার্থ। তিনি বলেন, ‘গত ২২ জুলাই আমার গাড়ির কাগজপত্রের ডেট (মেয়াদ) শেষ হইছে। এখন যেখানে-সেখানে ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি ধরে। আজকেও এক হাজার টাকার মামলা খাইছি। এখন এসে শুনি সব বন্ধ।’

দালালদের দৌরাত্ম্য থেমে নেইএদিকে, কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও গেটে থাকা দালালরা দাবি করছেন- তারা সব ধরনের কার্যক্রম করে দিতে পারবেন। লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানো, মালিকানা বদলের কাজও করে দিতে পারবেন বলে জানাচ্ছেন দালালরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিআরটিএ গেটে ৬-৭ জন দালাল ঘোরা-ফেরা করছেন। কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে আসলে কিংবা বিআরটিএ-এর গেটে আসলে তারা ঘিরে ধরছেন। লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়াতে তারা বিভিন্ন সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে ৫০০-৮০০ টাকা করে নিচ্ছেন।

তবে সেবাগ্রহীতারা বলছেন, ভুয়া সিল ও স্বাক্ষর দিয়ে তারা আসলে প্রতারণা করছেন।

সেবাগ্রহীতা পার্থ বলেন, ‘ভেতরে কোনো কর্মকর্তা নেই। তারা স্বাক্ষর আনবে কীভাবে? ভুয়া স্বাক্ষর ও সিল দিয়ে তারা টাকা নিচ্ছে। এসব জালিয়াতি ট্রাফিক পুলিশ দেখলে সহজেই ধরে ফেলবে।’

এসএম/এএএইচ/জেআইএম/জিকেএস