পেগাসাস স্পাইওয়্যার নিয়ে উদ্বেগ এবং সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার (২৪ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এ দাবি জানান।
Advertisement
এতে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশ-বিদেশে ও আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা-সমালোচনার অন্যতম বিষয় হচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠান এনএসও কর্তৃক তৈরি পেগাসাস স্পাইওয়্যার। বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোও বেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি উপস্থাপন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন যেহেতু গ্রাহকদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে তাই তারাও এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন দেশে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ফোনে নজরদারি চালানো হয়েছে বা চেষ্টা করা হয়েছে এমন ৫০ হাজার ফোন নাম্বার এর তালিকা প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি। ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপের তৈরি পেগাসাস স্পাইওয়্যার নাগরিকদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে প্রবেশ করে ওই ব্যক্তির ইমেইল এড্রেস, কল রেকর্ড, ছবি এমনকি মুঠোফোনে সংরক্ষিত সকল মোবাইল নাম্বার নিয়ে নিতে পারে।
‘নিয়ম অনুযায়ী এই পেগাসাস স্পাইওয়্যার প্রযুক্তি শুধুমাত্র সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণ ব্যক্তি বা সংস্থার কাছে এই প্রযুক্তি বিক্রির নিয়ম নেই। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিশ্বের প্রথম সারির ১৭টি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশের সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, মানবাধিকারকর্মী ছাড়াও সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি করছে এই পেগাসাস স্পাইওয়্যার প্রযুক্তি। যদিও প্রথম তথ্যের মধ্যে ১০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ নেই। তবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের নাম রয়েছে।’
Advertisement
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট যারা এই অনুসন্ধানের পার্টনার তারা বলছে, বাংলাদেশেও এই তালিকায় রয়েছে। আমরা জানি, ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। এমনকি বছরের শুরুর দিকে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে ইসরায়েল থেকে ইমচী ক্যাচার কেনা হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। এই সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ করেছিল বাংলাদেশ সরকার। সরকারের বক্তব্য এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতেই এমন প্রচারণা চালানো হয় বলে আমরা মনে করি। তবে পেগাসাস স্পাইওয়্যারের সংবাদ হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
‘এতে দেশের নিরাপত্তা, ভাবমূর্তি এবং সংবিধান অক্ষুণ্ণ রাখা চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কারণ সংবিধানের ৪৩ (খ) ধারায় প্রত্যেক নাগরিকের তথ্যের গোপনীয়তার নিশ্চয়তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্য দেশ থেকে আমাদের দেশের সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী বা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে কি-না তা সরকারকে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাই। এছাড়াও বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবেই পরিষ্কার করতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
এইচএস/এআরএ/এমএস
Advertisement