চুল পড়ার সমস্যায় কমবেশি সবাই ভুগে থাকেন। আবার খুশকির সমস্যা খুবই সাধারণ বিষয়। চুল পড়া, খুশকির সমস্যাসহ মাথার ত্বকে র্যাশ, চুলকানি ইত্যাদির সমস্যা খুবই সাধারণ হিসেবে বিবেচিত। অপরিষ্কার চুল, মানহীন চুলের প্রসাধনীর ব্যবহার ইত্যাদি কারণে চুল ও মাথার ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
Advertisement
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে চুল ও স্ক্যাল্পের বিভিন্ন সমস্যা মোটেও সাধারণ বিষয় নয়। এগুলো হতে পারে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ। শরীরে কোনো রোগ বাসা বাঁধলে, তার উপসর্গ হিসেবে চুল বা মাথার ত্বকের সমস্যা যেমন- চুল পড়া, খুশকি, চামড়া ওঠা, চুলকানির উপসর্গ দেখা দেয়।
আর এর থেকে বাঁচতে দামি দামি চুলের প্রসাধনী ব্যবহার না করে রোগ নির্মূল করতে হবে গোড়া থেকে। তারও আগে জেনে নেওয়া দরকার কোন কোন রোগের উপসর্গ হতে পারে এই চুলপড়া বা মাথার ত্বকের সমস্যা-
খুশকির সমস্যা
Advertisement
অনেকেই খুশকির সমস্যায় ভুগে থাকেন। যদিও এটি খুবই স্বাভাবিক বিষয়। মাথার তালুর ত্বক শুষ্ক হয়ে গিয়েই সাধারণ এই সমস্যা দেখা দেয়। তবে অত্যাধিক পরিমাণে খুশকি হলে সাবধান।
চিকিৎসকদের মতে মাথার তালুর ত্বকে ছত্রাক হয়ে এরকম হয়। এ ছাড়াও তৈলাক্ত ত্বক, স্ট্রেস, ওজন বৃদ্ধি, ঠান্ডা এবং শুষ্ক আবহাওয়ায় কারণে অ্যাকজিমার কারণেও খুশকি হতে পারে।
হলদে খুশকি
মাথার তালুতে চিটচিটে হলদেটে খুশকি হয়। সেবরহিক ডারমাটিটিস নাম এক ধরনের ত্বকের সমস্যার কারণে এই হলদে খুশকি হয়। এই খুশকি চুলের জন্য খুবই খারাপ। এর ফলে অত্যাধিক পরিমাণে চুল ঝরে।
Advertisement
এ ছাড়াও মাথার তালুতে তৈলাক্তভাবের কারণেই এই সমস্যা হয়ে থাকে। হরমোনের পরিবর্তন, ছত্রাক কিংবা পার্কিনসনের মতো স্নায়ুঘটিত রোগের উপসর্গ হতে পারে এই হলদে খুশকি। এটি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চুল পড়া
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে ৭০-১০০টি চুল পড়া স্বাভাবিক। তবে সবসময় যে চুল পড়া মানেই ভয়ের তা কিন্তু নয়। চুল পড়ার মাস তিনেকের মধ্যে নতুন চুল গজায়। পুরোটাই প্রাকৃতিক নিয়ম।
তবে স্বাভাবিকের থেকে বেশি চুল পড়লেই সাবধান হতে হবে। পেটের সমস্যা, ওষুধ কিংবা যেকোনো টিকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া, সন্তান প্রসবের পর, অপারেশ, স্ট্রেস, অবসাদ, থাইরয়েড ইত্যাদির কারণে চুল পড়ে।
পুরুষের টাক পড়া
অনেক পুরুষেরই মধ্যেই চুল পড়া বা টাক পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টাক পড়ার সমস্যা বেশি দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাথার তালুর মাঝ থেকে টাক পড়তে শুরু হয়। চুল পড়ার কারণে টাক দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শুষ্ক চুল এবং আগা ফাটার সমস্যা
শরীরের পুষ্টির কারণে চুল শুঙ্ক হয়ে যেতে পারে। ভিটামিন এ, প্রোটিন, আয়রন ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, জিঙ্ক চুলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। শরীরে যেকোনো একটির অভাব দেখা দিলেই চুল শুষ্ক হতে থাকে। অন্যদিকে শরীরের ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকলে চুলের আগা ফেটে যেতে শুরু করে।
চুল ও স্ক্যাল্প ভালো রাখতে যা যা করতে পারেন-
>> চুলের সমস্যা দেখা দিলে তা অবহেলা করবেন না। আজেবাজে প্রসাধনী ব্যবহার করবেন না চুলে।
>> চুলে অ্যামোনিয়াযুক্ত কোনো রং ব্যবহার করে হেয়ার কালার করবেন না।
>> কারও পরামর্শে চুলে বিভিন্ন প্যাক বা তেল ব্যবহার করবেন না।
>> চুলের সমস্যা দেখা দিলে উপযুক্ত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
>> শরীর সুস্থ থাকলেই চুল বা মাথার ত্বক ভালো থাকবে। তাই প্রচুর পরিমাণে ফল, শাক, সবজি ও পানি খান। নিয়মিত দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার খান।
>> অতিরিক্ত স্ট্রেসের কারণেও চুলের সমস্যা দেখা যায়। তাই দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন।
>> ঘুম কম হলে চুলের সমস্যা হয়। প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
>> পরিবেশ দূষণের কারণে চুল পড়া এবং খুশকির সমস্যা বাড়তে পারে। তাই চুল খোলা রেখে বাইরে বের হবে না। স্কার্ফ বা ক্যাপ ব্যবহার করুন।
সূত্র: ওয়েব এমডি
জেএমএস/জিকেএস