বিনোদন

ফকির আলমগীরের মরদেহ আনা হবে শহীদ মিনারে

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের উদ্দেশে দেশবরেণ্য গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীরের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আনা হবে।

Advertisement

শনিবার (২৪ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ব্যবস্থাপনায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ফকির আলমগীরের নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠিত হবে। কঠোর লকডাউনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে শনিবার সকাল ১১টার দিকে খিলগাঁও পল্লীমা সংসদে তার প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে বাদ জোহর খিলগাঁও মাটির মসজিদে তার দ্বিতীয় জানাজা হবে। পরে খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গতকাল (২৩ জুলাই) ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফকির আলমগীর। এর আগে গত ১৫ জুলাই রাতে তাকে হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল।

Advertisement

ফকির আলমগীরের ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় তার বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়। রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড আইসিইউ ইউনিটের ইনচার্জ ডা. আমিনা সুলতানা তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

কয়েক দিন ধরে জ্বর ও খুসখুসে কাশিতে ভুগছিলেন ফকির আলমগীর। পরে তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। করোনার নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ ধরা পড়ে। ওই দিন থেকেই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

পরে গ্রিন রোডের একটি হাসপাতালে নেয়া হয় ফকির আলমগীরকে। সেখান থেকে তাকে গুলশানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। হাসপাতালে ভর্তির পর দুই ব্যাগ প্লাজমা দেয়া হয়।

ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা।

Advertisement

বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ছিলেন ফকির আলমগীর। গণসংগীত ও দেশীয় পপসংগীতে তার রয়েছে ব্যাপক অবদান। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।

জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন তিনি। ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপের সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সংগীত বলয়ে প্রবেশ করেন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী একজন শব্দসৈনিক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন।

তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘ও সখিনা গেছোস কিনা ভুইলা আমারে’, ‘নাম তার ছিল জন হেনরি’। ‘আবহমান বাংলার লোকসংগীত’ নামে গতবছর একটি বইও লিখেছেন তিনি।

এআরএ/এমএস