১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ আন্তর্জাতিক মঞ্চে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এর প্রায় ৩৫ বছর ৪ মাস পর তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে আলাদা আলাদা সেঞ্চুরি পূরণ হচ্ছে টাইগারদের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটিতে টস হলেই পূরণ হবে এই মাইলফলক।
Advertisement
এখনও পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ৯৯টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। চলতি জিম্বাবুয়ের সফরের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিই হবে বাংলাদেশের শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এর আগে ২০০৪ সালে ওয়ানডেতে ও ২০১৭ সালে টেস্ট ফরম্যাটে নিজের শততম ম্যাচ খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ।
অর্থাৎ একদিনের ক্রিকেট দিয়ে যাত্রা শুরুর পর খেলাটির ক্ষুদ্রতম সংস্করণ টি-টোয়েন্টির মাধ্যমে তিন ফরম্যাটের শতক পূরণ হচ্ছে বাংলাদেশের। ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের শততম ম্যাচটিতে জয় পেয়েছিল টাইগাররা। তাই টি-টোয়েন্টিতেও একই প্রত্যাশা থাকবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের ওপর।
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের শততম ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেদিন মাশরাফি বিন মর্তুজার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ১৫ রানে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিকরা। নিজেদের প্রথম ১০০ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় ছিল ৬টি ম্যাচে।
Advertisement
টেস্টে বাংলাদেশের শততম ম্যাচটি ছিল বিদেশের মাটিতে। ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ শ্রীলঙ্কা সফরের দ্বিতীয় টেস্টটিতে নানান আয়োজনে রঙিন করা হয়েছিল বাংলাদেশের জন্য। এসব আয়োজনের স্বার্থকতা প্রমাণে প্রয়োজন ছিল শুধু বাংলাদেশের জয়।
সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি ও তামিম ইকবালের দু’টি মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের সুবাদে কলম্বোর সেই টেস্টে ৪ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। যার সুবাদে জয় দিয়েই রাঙিয়ে রাখা হয় শততম টেস্ট ম্যাচটি। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে প্রথম ১০০ ম্যাচে ৭টিতে জিতেছিল বাংলাদেশ।
আগের দুই শততম ম্যাচের একটিতেও ছিলেন না এবার শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শততম ওয়ানডে শুরুর সময় সবেমাত্র পেশাদার ক্যারিয়ার শুরুর পথে ছিলেন তিনি। আর শততম টেস্টের সময় অফফর্মের কারণে বাদ পড়েছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দল থেকে।
সেই মাহমুদউল্লাহই এবার বাংলাদেশের শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের অধিনায়ক। আগের দুই সেঞ্চুরির ম্যাচে না থাকার আক্ষেপ মেটানোর পাশাপাশি, সেই দুই সেঞ্চুরির ম্যাচে জেতার ধারাবাহিকতাও ধরে রাখার দায়িত্ব এখন মাহমুদউল্লাহর কাঁধে।
Advertisement
চলতি সফরে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে ভালো করায় টি-টোয়েন্টিতেও সাফল্য পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী টাইগার অধিনায়ক, ‘টেস্টে ভালো খেলেছি। ওয়ানডেতে তিনটা ম্যাচই জিতেছি। বোলাররা ভালো করেছে। সেই আত্মবিশ্বাসটা অবশ্যই থাকবে। কাল (আজ বৃহস্পতিবার) যেন তা কাজে লাগিয়ে ফলটা নিজেদের পক্ষে আনতে পারি।’
ওয়ানডে ও টেস্টের তুলনায় টি-টোয়েন্টির শততম ম্যাচের আগে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা অনেক বেশিই বলা যায়। কিন্তু সার্বিক দিক বিবেচনায় আসলে বেশ তলানিতেই রয়েছে বাংলাদেশ। কেননা ৯৯ ম্যাচ খেলে মাত্র ৩২টিতে জিতেছে টাইগাররা। অথচ এই ফরম্যাটে অন্যান্য দেশগুলোর জয়ের হার আরও বেশি।
কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে এরই মধ্যে একশর বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছে আটটি দল। বিশ্বের নবম দেশ হিসেবে টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সেঞ্চুরি করতে চলেছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বেশি ১৭৩ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার রেকর্ড পাকিস্তানের দখলে। সবচেয়ে বেশি ১০৫ জয়ও তাদের।
বাংলাদেশের শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটিতে থাকছেন না দলের দুই অভিজ্ঞ তারকা ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও তামিম ইকবাল। পারিবারিক কারণে আগেই দেশে চলে এসেছেন মুশফিক আর তামিম খেলবেন না হাঁটুর ইনজুরির কারণে। তাই শততম ম্যাচটিতে নাইম শেখ ও নুরুল হাসান সোহানের খেলার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
শততম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশমোহাম্মদ নাইম শেখ, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।
এসএএস/আইএইচএস/এমএস