দেশজুড়ে

ঈদের দিনও করোনায় মৃত ৯ ব্যক্তির দাফন করল ‘বিবেক’

করোনা মহামারিতে কেউ কারও নয়। আপনজনের মৃত্যুতে পর হয়েছে আপনরাই। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফনকাজ সম্পাদনে এগিয়ে আসে ‘বিবেক’ নামে একটি মানবিক সংগঠন। গত ১৫ মাসে ব্যক্তিগত অর্থায়নে ‘বিবেক’ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় তিন শতাধিক মৃত ব্যক্তির দাফন ও সৎকারকাজ সম্পন্ন করেছে।

Advertisement

বুধবার (২১ জুলাই) ঈদের দিনেও বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মোট নয়জনের দাফনকাজ সম্পন্ন করেছে তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবছরের ১৮ মে ১১ জন সদস্য নিয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতা ইউসুফ মোল্লা টিপুর নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘বিবেক’। সবাই প্রথমে পরিবার থেকে অনুমতি নেন। পরে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের লিখিত অনুমতি নিয়ে নগরীর মৌলভীপাড়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যাংক কর্মকর্তা মাহবুব এলাহীর দাফনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় তাদের অনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী ২৭৫ জনের মরদেহ দাফন ও সৎকার করেছেন এ সংগঠনের সদস্যরা।

Advertisement

এদিকে বুধবার বিকেলে কুমিল্লা নগরীর নবাববাড়ি পানির ট্যাংক সংলগ্ন করোনা মরদেহ গোসলের স্থান পরিদর্শন করেছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। এ সময় বিবেকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইউসুফ মোল্লা টিপুর সাথে সার্বিক বিষয়ে কথা বলেন এবং ১১ সদস্যের খোঁজ-খবর নেন।

মেয়র সাক্কু বলেন, মহামারির এ মুহূর্তে বিবেকের কাজ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তাদের মতো যুবকরা এগিয়ে এলে দেশ এগিয়ে যাবে। মানবতার হাত আরও প্রসারিত হবে।

বিবেকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইউসুফ মোল্লা টিপু বুধবার রাতে জাগো নিউজকে বলেন, প্রথম দিকে করোনায় কারও মৃত্যু হলে কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসত না। মরদেহ দাফন নিয়ে বিপাকে পড়ত পরিবারগুলো। এমন দৃশ্য দেখা পর বিবেকের তাড়নায় আমি এ কাজে নেমে পড়ি। সহযোগী হিসেবে ১১ জনকে সঙ্গে নিয়ে গঠন করি বিবেক টিম। সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে এ সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

তিনি বলেন, ঈদের দিনেও বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ, চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনা ও বুড়িচং উপজেলায় ৯ জনের গোসল ও দাফনকাজ সম্পন্ন করেছি। মানবতার কল্যাণে আমরা এ কাজ চালিয়ে যেতে চাই।

Advertisement

জাহিদ পাটোয়ারী/বিএ/এমএস