ধর্ম

সামর্থ্যের মধ্যে উত্তম কাজই ইবাদাত

সামর্থ্যের মধ্যে উত্তম কাজই ইবাদাত

ইসলাম মধ্যম পন্থা অবলম্বনকে পছন্দ করে। কোনো ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা যাবে না, তেমনি ছাড়াছাড়িও করা যায় না। এটাকে বলা হয়, ইফরাত ও তাফরিত। ইসলামে উভয়টাই পরিত্যাজ্য। এক কথায় সকল কর্মে মধ্যপন্থার নির্দেশ প্রতিটি ক্ষেত্রেই। যেমন আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের গুণ প্রকাশ করে বলেন, ‘আর তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না বরং মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে। এ ব্যাপারে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তিনজন লোক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রীদের ঘরে আসল। তারা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইবাদাত-বন্দেগি সম্পর্কে জানতে চাইল। যখন তাদেরকে এ সম্পর্কে  জানানো হল, তখন তারা যেন এটাকে অপ্রতুল মনে করল। আর বলল, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোথায় আর আমরা কোথায়? তাঁর আগের পরের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। তাদের একজন বলল, আমি সারা রাত নামাজ পড়তে থাকব। আরেকজন বলল, আমি সারা জীবন রোজা রাখব। কখনো রোজা ছাড়ব না। আরেকজন বলল, আমি মেয়েদের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখব, কখনো বিয়ে করব না। ইতিমধ্যে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের কাছে আসলেন। আর বললেন, তোমরা তো এ রকম সে রকম কথা বলেছ। আল্লাহর কসম! তোমাদের চেয়ে আমি আল্লাহকে বেশি ভয় করি। তাঁর সম্পর্কে বেশি তাকওয়া (সতর্কতা) অবলম্বন করি। কিন্তু আমি রোজা রাখি আবার রোজা ছেড়ে দেই। আমি নামাজ পড়ি আবার নিদ্রা যাই। আর বিয়ে শাদীও করি। যে আমার আদর্শের (সুন্নাত) থেকে মখু ফিরিয়ে নেয় সে আমার দলভুক্ত নয়। (বুখারি ও মুসলিম)হাদিসের শিক্ষাএক. রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইবাদাত-বন্দেগির ধরণ, পদ্ধতি ও পরিমাণ সম্পর্কে জেনে সুন্নাতি আমলের প্রতি আগ্রহী হওয়া।দুই. ইসলামে বৈরাগ্যবাদের স্থান নেই। খাওয়া-দাওয়া, ঘুম-নিদ্রা, বিয়ে-শাদী, পরিবার-পরিজন ইত্যাদি সবকিছু নিয়েই ইসলামী জীবন। এগুলো বাদ দিয়ে যদি কেউ শুধু ইবাদাত-বন্দেগি করে ইসলাম পালন করতে চায় সে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মত বলে গণ্য হবে না।তিন. দুনিয়ার সকল কাজ-কর্ম ও অন্যের অধিকার আদায় করার সাথে সাথে সাধ্য ও সামর্থানুযায়ী ইবাদাত-বন্দেগি সম্পাদন করার নাম হল মধ্যপন্থা অবলম্বন। এটাই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদর্শ। তাই দুনিয়াদারী ছেড়ে দিয়ে শুধু ইবাদাত-বন্দেগিতে লিপ্ত হওয়াকে রাসুল নিষেধ করেছেন।সুতরাং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পথে ইবাদাত-বন্দেগি দুনিয়াদারী করে আল্লাহ নৈকট্য অর্জনে এগিয়ে আসা উচিত। আল্লাহ আমাদের সে পথে কবুল করুন। আমিন।এমএমএস/আরআইপি

Advertisement