লাইফস্টাইল

হৃদরোগ ও স্ট্রোকের জন্য দায়ী যেসব খাবার

বর্তমানে সবাই কমবেশি ভাজা-পোড়া ও ফাস্টফুড খেয়ে থাকেন। ঘরে এমনকি বন্ধুদের আড্ডায় ফাস্টফুড স্ন্যাকস হিসেবে না খেলে মন ও পেট ভরেই না! ক্ষতিকর জেনেও অনেকে পিজ্জা, বার্গার, স্যান্ডউইচ অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে থাকেন।

Advertisement

এই খাবারগুলোতে থাকে অত্যাধিক পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট। যা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ১৪.১ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ এই রোগের শিকার হচ্ছে।

বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় খাদ্যে উপস্থিত ফ্যাট হলো ট্রাইগ্লিসারল। যা তৈরি হয় মূলত তিনটি ফ্যাট অ্যাসিড ও একটি গ্লিসারল মলিকিউলের সমন্বয়ে৷ এই দু’টি মলিকিউল এস্টার নামক একটি বিশেষ রাসায়নিক বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত থাকে৷

বন্ধনের প্রকৃতি অনুসারে ‘ডাবল বন্ড ’ বা ‘সিঙ্গল বন্ড’ ফ্যাটকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়৷ এই তিনটি ভাগের নাম হলো- স্যাচুরেটেড ফ্যাট, মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট৷ স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে খারাপ ও ক্ষতিকর কোলেস্টরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

Advertisement

এর ফলে খারাপ কোলেস্টেরল হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহী ধমনী এবং ধমনীর পথ সংকীর্ণ করে রক্ত চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে৷ এর ফলে তৈরি হয় বিভিন্ন প্রাণঘাতী হৃদরোগ, মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশনসহ হার্ট অ্যাটাক৷

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট ক্যালোরির প্রায় ৫-৬ শতাংশ। তাই এর ব্যবহার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। আর এসব খাবার খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

মেয়োনিজ: ফ্রেঞ্চ ফ্রাই হোক আর বার্গার যেকোনো ফাস্টফুড খাওয়ার সময় সঙ্গে তো মেয়োনিজ রাখতেই হবে। খুবই সুস্বাদু মেয়োনিজ একঘেয়েমি সালাদকে সুস্বাদু করে তোলে। তবে জানলে অবাক হবেন, মজাদার এই খাবারে থাকে অধিক পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এক চা চামচ মেয়োনিজে ১৪ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এমনকি যদি দিনে ৩-৪ চামচ খাওয়া হয় তবে তা ক্ষতিকারক। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন দুই টেবিল চামচের বেশি মেয়োনিজ না খাওয়ার চেষ্টা করুন।

Advertisement

মাখন: মেয়োনিজের চেয়েও অধিক পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে মাখনে। প্রায় ৭ গ্রাম মাখনে থাকে ১৪ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট। তাই যতটা সম্ভব মাখন কম গ্রহণ করা উচিত। তবে আপনি যদি প্রতিদিন মাত্র এক থেকে দুই চামচ মাখন খান, তাতে স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হবে না।

কেক: ক্রিমে মাখো মাখো কেক খেতে যতই সুস্বাদু লাগুক না কেন, তা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। মাসে এক বা দুইদিন সামান্য খেতে পারেন কেক। তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি থাকবে না। তবে আপনি যদি সীমা ছাড়াই কেক খান তবে আপনার সমস্যা হতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।

চিজ: পিৎসা কিংবা বেকড পাস্তায় চিজ না থাকলে মুখেই পুরতে ইচ্ছে করে না! তবে চিজে ৩.৬ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। তাই হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে চিজ খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে।

ভাজা খাবার: প্রায় প্রতিদিনই ভাজাপোড়া খাবার খেয়ে থাকেন কমবেশি সবাই। তার মধ্য থেকে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, নাগেটসের মতো ভাজা খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন।

হুইপড ক্রিম: বেশিরভাগ কেক এবং পেস্ট্রি তৈরিতে ব্যবহৃত হয় হৃইপড ক্রিম। ১৫ গ্রাম এক টেবিল চামচ ৩ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এতে ওজন বেড়ে যায় দ্রুত পাশাপাশি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই এসব খাবার এড়িয়ে চলুন।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ

জেএমএস/জেআইএম