জয়পুরহাটে চলতি মৌসুমে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের জন্য প্রয়োজন ৫৪ হাজার মেট্রিক টন বীজ। এর বিপরীতে বিএডিসি থেকে চাহিদা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০ হাজার মেট্রিক টন। আর পাওয়া গেছে মাত্র ৫৩০ মেট্রিক টন বীজ আলু। ফলে জেলায় আলুর বীজের সঙ্কটে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। সরেজমিন জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, যে সকল চাষি নিজস্বভাবে আলুর বীজ সংরক্ষণ করে রেখেছেন শুধু তারাই খুব তাড়াতাড়ি জমিতে আলুর বীজ রোপণ করতে পেরেছেন। অন্যদিকে আলুর বীজ সঙ্কটের কারণে চড়া মূল্যে আলু চাষিরা বীজ কিনে রোপণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে আলু তারা হয়ে পড়েছেন দিশেহারা । দেশের দ্বিতীয় আলু উৎপাদনকারী জেলা জয়পুরহাটে এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৪০ হাজার হেক্টর জমি ধরা হলেও এর চাইতে বেশি জমিতে আলু চাষ হবে। এ পরিমাণ জমিতে আলুচাষের জন্য বীজ আলুর প্রয়োজন প্রায় ৫৪ হাজার মেট্রিক টন।বিএডিসি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বিএডিসি কর্তৃক এ জেলায় আলু বীজের চাহিদা দেয়া হয়েছে ১০ হাজার মেট্রিক টন। আর পাওয়া গেছে মাত্র ৫৩০ মেট্রিক টন। আলু বীজের এমন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মূল্য বেড়ে গেছে কয়েক গুণ।জয়পুরহাটে ১১৪ জন বিএডিসির তালিকাভুক্ত ডিলার রয়েছে। তাদের মাধ্যমে কৃষকদের আলুর বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে। যে বীজগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে সেগুলো হলো এসটারিস, ইসটিক, কার্ডিনাল ও গ্যানোলা।এসটারিস ৩১ টাকা, ইসটিক ২৯ টাকা ,কার্ডিনাল ২৯ টাকা, গ্যানোলা ২৬ টাকা কেজি দরে বীজ ডিলাররা বিক্রি করছে। এদিকে এসটারিস বীজের চাহিদা বেশি হওয়ায় কৃষকরা এই বীজ পাচ্ছেন না।জয়পুরহাট সদর উপজেলার ধারকি গ্রামের উজ্জ্বল কুমার রায় ও কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের কৃষক শামিম হোসেন এবং ক্ষেতলাল উপজেলার দাশড়া গ্রামের কৃষক খলিল হোসেন বলেন, গত বছরের তুলনায় মণ প্রতি এক থেকে দুই’শ টাকা বেশি মূল্যে কিনতে হচ্ছে আলু বীজ। আর এমন চড়া মূল্যে বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণ কেনায় আলুর উৎপাদন খরচও হবে অনেকটা বেশি। এ অবস্থায় আবারও লোকসান ঠেকাতে আগেভাগে সরকারিভাবে আলুর মূল্য নির্ধারণের দাবি জানান চাষিরা।জয়পুরহাটের আলু বীজ ব্যবসায়ী আহমেদুল ইসলাম জানান, সঙ্কট ও দাম বাড়তি হওয়ার কারণে আলু ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়েই বীজ আলু খাওয়ার আলু হিসেবে বিক্রি করেছেন। এতেও বীজ আলুর সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জয়পুরহাট জেলা কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক এজেডএম সাব্বির ইবনে জাহান বলেন, বীজ আলুর সঙ্কট নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শতভাগ আশাবাদী জেলার কৃষি বিভাগ। পাশাপাশি উৎপাদন ভাল হলে এবং সঠিক বাজার মূল্য পেলে গত মৌসুমের লোকসান এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন কৃষকরা।এবার বীজ আলুসহ কৃষি উপকরণসমূহের মূল্য বেশ চড়া হওয়ায় আলুর উৎপাদন খরচ হবে অনেকটায় বেশি। এ অবস্থায় আলুর ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করে আলু চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে পদক্ষেপ নিবে সরকার এমন প্রত্যাশা এ অঞ্চলের আলু চাষিদের।রাশেদুজ্জামান/এসএস/পিআর
Advertisement