ধর্ম

কুরআন নবুয়তের শ্রেষ্ঠ প্রমাণ

আল্লাহ তাআলা কুরআনের শুরুতে তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদের এবং আল্লাহ ইবাদাত-বন্দেগির আদেশ দিয়েছেন। অতপর আল্লাহ তাআলা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের এবং কুরআন মাজিদের সত্যতার প্রমাণ পেশ করেছেন। কুরআন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের শ্রেষ্ঠ মুজিজা। যার সত্যতায় তিনি উম্মুক্ত চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছেন। যারা কুরআনকে রাসুলের বানানো কথা বলে প্রচার করেছিলেন। আল্লাহ বলেন-‘এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোনো সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এসো। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো। আর যদি তা না পার, অবশ্য তা তোমরা কখনো পারবে না, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২৩-২৪)আল্লাহ বলেন, আমি যে কালাম আমার প্রিয় রাসুলের উপর নাজিল করেছি তার সত্যতা সম্পর্কে তোমাদের অন্তরে যদি কোনো সন্দেহ থেকে থাকে, সে জন্যে কুরআন দায়ী নয়। বরং দায়ী তোমাদের অপবিত্র মন, তোমাদের জ্ঞানের দৈন্য, বিবেক-বুদ্ধির অভাব, সে অভাবের কারণেই তোমরা মহাসত্য আল-কুরআনের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করছ এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি অবিশ্বাস করছ। তাই তোমাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ হলো- যদি তোমরা পবিত্র কুরআনকে আল্লাহর কালাম মনে না করে, মানব রচিত তথা রাসুল রচিত গ্রন্থ মনে কর, তবে কুরআনের মাত্র ৩টি (তিন) আয়াত বিশিষ্ট একটি ক্ষুদ্রতম সুরার ন্যায় একটি সুরা রচনা করে পেশ কর। আর  এ কাজে আল্লাহ ব্যতিত তোমাদের যত সাহায্যকারী রয়েছে সবার সাহায্য-সহায়তা গ্রহণ করতে কোনো বাধা নেই। যদি তোমরা তোমাদের দাবিতে সত্যবাদী হও। কুরআনে এ স্থায়ী চ্যালেঞ্জ বিগত দেড় হাজার বছর যাবত অবিশ্বাসীদের প্রতি করে রাখা হয়েছে। চ্যালেঞ্জ স্বরূপ কুরআনে সবচেয়ে ছোট সুরা ‘সুরা কাউসার’ কাবা ঘরের সামনে লিখে রাখা হয়েছিল। তৎকালীনর যুগের আরবি ভাষার মহাপণ্ডিত কবি-সাহিত্যিকগণ সর্বশক্তি ব্যয় করে অনুরূপ সুরা রচনায় ব্যর্থ হয়েছিল। তাই জনৈক কবি সুরা কাউসারের নিচে একথাটি লিখে রেখেছিল- ‘লাইসা হাজা কালামুল বাশার’ অর্থাৎ এটি কোনো মানুষের কথা নয়, এর মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।বিজ্ঞানের এ যুগেরও কুরআন ও রাসুলের প্রতি অবিশ্বাসী লোকের অভাব নেই। এ কথা সর্বজনবিদিত এবং স্বীকৃত যে, কুরআন যেমন সত্য তেমনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাত তেমনি সত্য। তথ্য প্রমাণ দিয়ে তাওহিদ ও রিসালাতের মোকাবেলা করা আদৌ কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তাইতো আল্লাহ অপর আয়াতে ঘোষণা করেন- (হে রাসুল!) আপনি বলুন, যদি মানব ও জ্বিন এই কুরআনের অনুরূপ রচনা করে আনয়নের জন্যে জড়ো হয়, এবং তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়; তবুও তারা কখনও এর অনুরূপ রচনা করে আনতে পারবে না। (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত 88)    সুতরাং যখন কুরআনের অনুরূপ সুরা তৈরি করা সম্ভব নয়, এমতাবস্থায় কুরআন ও রিসালাতের বিরোধিতা করার ভ্রান্ত নীতি পরিহার করা এবং কুরআন-সুন্নাহর শিক্ষা অনুযায়ী জীবন-যাপন করে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করা বুদ্ধিমানের কাজ। কেননা এ কথা মনে রাখা উচিত, জাহান্নামের আগুনের জ্বালানি হবে মানবজাতি এবং পাথর। অতএব জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে আত্মরক্ষায় কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। আল্লাহ আমাদেরকে এ আমল অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/পিআর

Advertisement