জাতীয়

‘৮ দিনের জন্য বাস চালু তামাশা’

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) থেকে আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে গণপরিবহন চলবে। এখন বাস ধোয়া-মোছাসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। তবে অল্প সময়ের জন্য গণপরিবহন চালু করায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তারা।

Advertisement

মালিক-শ্রমিকদের অভিযোগ, করোনার অজুহাতে গত ১৫ মাসের মধ্যে মাত্র পাঁচ মাস গণপরিবহন চলছে। বাকি সময় লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ ছিল। এতে লাখো মালিক-শ্রমিকের আয় রোজগার বন্ধ রয়েছে। তারা সংসার চালাতে পারছে না। এখন মাত্র ৮ দিনের জন্য গণপরিবহন চালু করা তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।

মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে দিনে চার শতাধিক বাস বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর, বৃহত্তর ময়মনসিংহ তথা নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর, টাঙ্গাইল জেলায় চলাচল করে। এছাড়া ওই টার্মিনাল থেকে বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ সিলেটে আরও দেড় শতাধিক বাস যাত্রী পরিবহন করে।

বুধবার (১৪ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, টার্মিনালের ভেতর তিন শতাধিক দূরপাল্লার বাস সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করা রয়েছে। এরমধ্যে এক -তৃতীয়াংশ বাসে ধোঁয়া-মোছার কাজ করছেন চালক ও শ্রমিকেরা। ইঞ্জিন চালু দিয়ে পরীক্ষাও করছেন তারা।

Advertisement

সমান তালে চলছে নিজ নিজ পরিবহন টিকিট কাউন্টার পরিস্কারের কাজ। টার্মিনালের দ্বিতীয় তলায় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে আসা-যাওয়া করছেন বিভিন্ন পরিবহনে মালিকরা। টার্মিনালের ভেতর ফুটপাতে হরেক রকম পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসছেন হকাররা।

রিফাত পরিবহনের চালক সাব্বির হোসেন। বেলা ১১টার দিকে তিনি টার্মিনালে আসেন। বাস পরিস্কার করে ইঞ্জিন চালু দেন। আলাপকালে তিনি বলেন, এই অল্প সময়ের জন্য গণপরিবহন চালুর কোনো দরকার ছিল না। কারণ ঈদে ঘরমুখো মানুষের কারণে সব সড়কেই যানজট থাকে। চাইলেও বেশি যাত্রী নেওয়া সম্ভব না।

তিনি বলেন, লকডাউনে কাজ বন্ধ থাকায় তাদের অনেক শ্রমিকের চার-পাঁচ মাসের ঘর ভাড়া বাকি। এখন কাল থেকে গণপরিবহন চালু হলে বকেয়া ভাড়ার জন্য চাপ দেবেন মালিকরা।

মহাখালী আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি শওকত আলী বাবুল জাগো নিউজকে বলেন, অনেক পরিবহন মালিক ব্যাংক থেকে মোটা অংকের সুদে টাকা নিয়ে বাস কিনেছেন। করোনার সময় বাস বন্ধ থাকলেও ব্যাংক সুদ নেয়া বন্ধ করেনি।

Advertisement

তিনি বলেন, শ্রমিকদের বেতন-ভাতাও কম-বেশি দিতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লকডাউনেও দূরপাল্লার বাস চলতে পারে। সরকার গণপরিবহন চালু রাখলে লাখ লাখ পরিবহন মালিক শ্রমিক বেঁচে যাবে।

এনা পরিবহনের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মাঈন উদ্দিন। তিনি বলেন, লকডাউনের এ সময়ে তারা তাদের পরিবহনের সব শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। এখন মাত্র আট দিনের জন্য বাস চালু করতে বলেছেন পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।

এমএমএ/এএএইচ/এমকেএইচ