তামাম দুনিয়ার ফুটবলামোদীদের চোখ এখন ব্রাজিলের মারাকানায় আর লন্ডনের ওয়েম্বলিতে। এ দুই ঐতিহাসিক ভেন্যুতে নিষ্পত্তি হবে ফুটবল বিনোদনের দুই অঞ্চল দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের। মারাকানা তার বুক থেকে বের করবে ল্যাতিন শ্রেষ্ঠত্বের নামটি, তা জানা যাবে রোববার ভোরে। ইউরোপে ইতালি নাকি ইংল্যান্ড সে উত্তর মিলবে রোববার রাতেই। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল সমর্থকদের রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা। ট্রফি থাকবে নেইমারের হাতেই, নাকি প্রথমবার উঠবে মেসির হাতে? আর তো মাত্র দুই দিন। সেমিফাইনাল পর্যন্ত দুই দলের ম্যাচগুলো পর্যালোচনা করে কেউ এগিয়ে রাখছেন ব্রাজিলকে, কেউ আর্জেন্টিনাকে। কেউ বলছেন ৯০ মিনিটেই চ্যাম্পিয়ন পেয়ে যাবে কোপা আবার কেউ বলছেন টাইব্রেকারেও গড়াতে পারে ফাইনাল।
Advertisement
এবারের কোপার ফাইনাল ঘিরে নতুন বিষয় হলো ব্রাজিলিয়ান সমর্থকরাও নাকি চাইছে আর্জেন্টিনা জিতুক। আসলে সেটা হবে ‘মেসি জিতুক’। মেসির এটাই শেষ কোপা। কাতার বিশ্বকাপে দেখা গেলেও পরের মহাদেশীয় টুর্নামেন্টের দর্শক থাকবেন সব মহাদেশের মধ্যে এ সময়ের সেরা ও জনপ্রিয় ফুটবলার। তাই জাতীয় দলের জার্সিতে ট্রফি ছোঁয়ার শেষ সুযোগ মেসির সামনে।
মজার বিষয় হলো ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যেও অনেকে মেসির জন্য আর্জেন্টিনার জয় চাচ্ছেন। এ নিয়ে সমর্থকদের ওপর মহা ক্ষুব্ধ নেইমার। তিনি সমর্থকদের দেশপ্রেমের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন।
এমন এক ম্যাচ সামনে রেখে বাংলাদেশের সাবেক কোচ এডসন সিলভা ডিডো কী ভাবছেন? এ ব্রাজিলিয়ানের কথায় নিশ্চয়ই ক্ষেপে যাবে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা যে কোনো দলের সমর্থক। ডিডোর চোখে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার বর্তমান দুটি দলই খারাপ, ‘ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা দুই দলই খুব খারাপ। তাই যে কোনো দলই জিততে পারে ফাইনালে। ম্যাচে যাই হোক, যাই ঘটুক, তাতে ভালো কিছু বলা যাবে না। খারাপ খারাপই- যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটা আমূল পরিবর্তন করা যায়।’
Advertisement
কিন্তু কেন? আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের মতো দলকে খুব খারাপ বললে তো কিছু যুক্তি থাকতে হবে। কী যুক্তি খারাপ বলার পেছনে? ডিডো বললেন, ‘খুব সহজ। আর্জেন্টিনার দিকে তাকান। মেসি, ডি মারিয়া ও অ্যাগুয়েরোর মতে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা বেশি বয়সের। এর মধ্যে কেবল মেসি এখনো প্রতিপক্ষের জন্য বিপদের কারণ হতে পারেন। বাকিরা? তারা গড়পরতা। নিজ নিজ ক্লাবেই তারা প্রধান খেলোয়াড় নন। পাশপাশি দেখেন ২৯ বছরে আর্জেন্টিনা কয়টা ট্রফি জিতেছে। একটাও না।’
নিজ দেশ ব্রাজিলের দল নিয়ে ডিডো বলেন, ‘বর্তমান দলটি যে ফুটবল খেলছে তা ব্রাজিলের প্রকৃত ফুটবল কোনভাবেই উপস্থাপন করে না। নেইমার বিশ্বতারকা হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পর থেকে ব্রাজিল এমনভাবে দল গঠন করে, তা যেন নেইমারকেই বেশি পরিবেশনের জন্য। যতটা না নেইমার দলকে দিতে পারে।’
নিজ দেশের তারকা ফুটবলারের কিছু বিষয় নিয়েও বিরক্ত বাংলাদেশের সাবেক এই কোচ, ‘খেলার সময় নেইমার যেভাবে অভিনয় করে তা রীতিমতো বিরক্তিকর। এমন ভাব করেন যেন, তিনি দলের বিশাল কিছু করছেন। দলে থাকতে তারতো এটা করার দরকার নেই। নেইমার বার্সেলোনা থেকে পিএসজিতে যাওয়ার পর খেলার ধরণ বদলেছেন, যেটা আমার ব্যক্তিগত ধারণা। পিএসজিতে তিনি যা করছেন তা সান্তোস ও বার্সেলোনায় যা করেছেন তার অর্ধেকও নয়। তবে এটা বলবো নেইমার এখনো মেসির মতো বিপজ্জনক ফুটবলার।’
মেসি, নেইমার ও রোনালদোরা বিশ্বসেরা। এ নিয়েই ব্যাখ্যা আছে ডিডোর, ‘বিশ্ব ফুটবলে টেকনিক অনেক কম এখন। যে কারণে, মেসি, নেইমার ও রোনলাদোরা বিশ্বের সেরা ফুটবলার হিসেবে নিজেদের ধরে রাখতে পারছেন।’
Advertisement
আরআই/আইএইচএস/এসএএস/এমএস