দেশজুড়ে

কলকাতা-খুলনা বাস সার্ভিস চালু হচ্ছে ২৩ ডিসেম্বর

দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত কলকাতা-খুলনা ভায়া যশোরের মধ্যে সরাসরি যাত্রীবাহী বাস সার্ভিস চালু হচ্ছে  চলতি মাসেই। কলকাতা-ঢাকা এবং কলকাতা-ঢাকা-আগরতলার পর এটি হবে দু`দেশের মধ্যে তৃতীয় সরাসরি বাস সার্ভিস। সার্কভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে সরাসরি বাস সার্ভিস চালুর ক্ষেত্রে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল মোটর ভেহিকেলস্ এগ্রিমেন্ট (বিবিআইএন-এমভিএ) এর আওতায় এই বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।ভারতের ভূতল পরিবহন নিগম সূত্রে জানা গেছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় শহর খুলনা মহানগরের সঙ্গে ভারতের পশ্চিম বাংলার রাজধানী কলকাতার মধ্যে আগামী ২৩ ডিসেম্বর সরাসরি এ বাস সার্ভিস চালু হবে। বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল মোটর ভেহিকেলস্ এগ্রিমেন্ট (বিবিআইএন-এমভিএ) এর ফ্রেন্ডশিপ মোটর র্যালি ২ ডিসেম্বর কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাটে শেষ হয়। তখন অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গাদকারী, পশ্চিম বাংলার যুব কল্যাণ, আবাসন ও ক্রীড়া দফতরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব বিজয় ছিব্বার কলকাতা-খুলনা বাস সার্ভিস চালুর এ ঘোষণা দেন। তবে এ বাস সার্ভিস চালুর আনুষ্ঠানিকতা পরিকল্পনা অনুযায়ী শেষ হলে ঘোষিত দিনক্ষণ ঠিক থাকবে বলে জানা গেছে। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, বিবিআইএনএমভিএ বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট চার দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। পর্যটন শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটবে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য তিন দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীরা নিজেদের দেশের গাড়ি নিয়ে চার দেশ ভ্রমণ করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কিছুদিন আগে কলকাতা-আগরতলা-ভায়া ঢাকা রুটে বাস চলাচলের শুভ সূচনা করেছেন।ওপারের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে সড়ক ব্যবস্থা সহজতর করতে ইতোমধ্যে এডিবির অর্থায়নে কলকাতা-পেট্রাপোল জাতীয় সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ দ্রুত হাত দেওয়া হবে। এদিকে বিবিআইএনএমভিএ অনুসারে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আরও একটি নতুন বাস রুট চালু হচ্ছে। ভারতের পরিবহন দফতরের কর্তারা জানান, আগামী ২৩ ডিসেম্বর কলকাতা-খুলনা ভায়া যশোর রুটের বাস সার্ভিসের শুভ সূচনা হবে কলকাতা থেকে। পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এ বাস যাত্রার আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করবেন। এই রুটে ভারতীয় বাস চালাবে ভূতল পরিবহন নিগম। জানা যায়, বিবিআইএনএমভিএর খসড়া প্রটোকল তৈরি হয়েছে। সেই প্রটোকল দ্রুত চুড়ান্ত করে চার দেশের মধ্যে যান চলাচল অতি শীঘ্রই শুরু হবে। চার দেশের মধ্যে যান চলাচল শুরু হলে যে সমস্ত গাড়ি সীমান্ত পার হয়ে চলাচল করবে সেসব গাড়িতে জিপিএস সংযোগ থাকবে। কন্ট্রোল রুম থেকে সেসব গাড়ির উপর নজরদারী করা যাবে। পণ্যবাহী গাড়িগুলো বিশেষভাবে সিলগালা করা থাকবে।কলকাতা-খুলনা ভায়া যশোর রুটে সরাসরি বাস সার্ভিস চালু হলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন, বাগেরহাটের খানজাহান আলী মাজারসহ খুলনার বিভিন্ন এলাকায় বিদেশি পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পাবে। পর্যটন শিল্পের বিকাশ হবে। খুলনার সঙ্গে ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও বিকাশ ঘটবে। এছাড়া খুলনা অঞ্চল থেকে চিকিৎসা সেবার জন্য ভারত ভ্রমণকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হবে। মোট কথা বন্ধুপ্রতীম দু`দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক এবং ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের নাগরিকদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন এবং সহজ হবে বলে তারা আশাবাদী। মো. জামাল হোসেন/এমজেড/পিআর

Advertisement