হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িজ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল আমেরিকান ও কলম্বিয়ান নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত ২৮ জনের একটি টিম। এদের মধ্যে ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তিনজন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। বাকি আটজন এখনো পলাতক। বৃহস্পতিবার হাইতির পুলিশ প্রধান এসব তথ্য জানিয়েছেন। গত বুধবার হাইতির রাজধানী পোর্ট অ-প্রিন্সে ময়িজের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। তাদের গুলিতে প্রাণ হারান হাইতিয়ান প্রেসিডেন্ট। গুরুতর আহত হয়েছেন তার স্ত্রী মার্টিন ময়িজও।
Advertisement
এরপর থেকে হামলাকারীদের ধরতে কঠোর অভিযান শুরু করে হাইতির নিরাপত্তা বাহিনী। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে এবং গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন তারা হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীকে ধরার চেষ্টায় রয়েছেন।
পুলিশের গাড়িতে গুলিবিদ্ধ দুই আসামি
গ্রেফতার সন্দেহভাজনদের কয়েকজনকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করেছে হাইতি পুলিশ। তাদের কাছ থেকে কলম্বিয়ান পাসপোর্ট এবং অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক হামলাকারীদেরও দ্রুত খুঁজে বের করার শপথ করেছেন হাইতি পুলিশের মহাপরিচালক লিওন চার্লস।
Advertisement
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টকে হত্যার মিশনে ২৮ জনের দল ছিল, যাদের ২৬ জনই কলম্বিয়ার নাগরিক। আমরা ১৫ কলম্বিয়ান এবং দুইজন হাইতিয়ান বংশোদ্ভূত মার্কিনিকে গ্রেফতার করেছি। তিন কলম্বিয়ান মারা গেছে এবং আটজন পলাতক রয়েছে।
এর আগে অবশ্য গোলাগুলিতে চার সন্দেহভাজন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল হাইতি পুলিশ। সংখ্যাগত এই বিভ্রান্তির কারণ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়।
হাইতির পুলিশ প্রধান হত্যাকারীদের ‘ভাড়াটে খুনি’ উল্লেখ করে বলেন, আমরা হত্যাকাণ্ডে শারীরিক অংশগ্রহণকারীদের ধরেছি, এখন বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণকারীকে (পরিকল্পনাকারী) খুঁজছি।
নিহত প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়িজ
Advertisement
কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী দিয়েগো মোলানোও বলেছেন, ময়িজ হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের অন্তত ছয়জন কলম্বিয়ান নাগরিক এবং সাবেক সেনা সদস্য।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ ইঙ্গিত দিচ্ছে, তারা কলম্বিয়ান নাগরিক এবং সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য। এ ঘটনায় তদন্তে সহযোগিতার জন্য কলম্বিয়ার সেনাবাহিনী এবং পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান এ মন্ত্রী।
এদিকে, হাইতির নির্বাচন মন্ত্রী বার্তা সংস্থা এপি’কে জানিয়েছেন, বন্দুকধারী হামলাকারীদের একজন হাইতিয়ান-আমেরিকান। ওই ব্যক্তির নাম জেমস সোলেজেস। তবে হাইতির প্রেসিডেন্ট হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিক জড়িত কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ।
সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/এমএস