দেশজুড়ে

মির্জাপুরে প্রচারণার মাঠে আ. লীগ ও বিএনপি

সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থাকলেও আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মির্জাপুর পৌরসভায় মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। ফলে মির্জাপুরে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে দেখা যাচ্ছে না।আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহাদৎ হোসেন সুমন ও বিএনপির প্রার্থী হযরত আলী মিঞা, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৩ জন ও তিনটি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও মির্জাপুর পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. তাজুল ইসলাম। অবশ্য রিটার্নিং অফিসারের বাছাইয়ে তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিরর প্রার্থী আবু তালেব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ হারিয়েছেন। মির্জাপুরে ভোটের মাঠে এখনও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৪৪ জন প্রার্থী। এখন শুধুই অপেক্ষা প্রতীক বরাদ্দের। আগামী ১৪ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর তারা নামবেন আনুষ্ঠানিক প্রচারণায়। তবে এবারের নির্বাচন দলভিত্তিক হওয়ায় দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত মেয়র প্রার্থীদের ইসির প্রতীকের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে না। তারা দলীয় প্রতীক নিয়েই ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন।কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অফিসের বৈধ ৩৩ জন প্রার্থীই উটপাখি প্রতীক চেয়েছেন। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রিটার্নিং অফিসার। তবে রিটার্নিং অফিসার বলেছেন প্রার্থীরা একই প্রতীক চাওয়ায় সমঝোতার সুযোগ দেয়া হবে। প্রার্থীরা সমঝোতা করতে না পারলে নির্বাচন অফিস লটারির মাধ্যমে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।  এদিকে বুধবার সকাল থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাহাদৎ হোসেন সুমন দলীয় প্রতীক দিয়ে ছাপানো পোস্টার ও হ্যান্ডবিল নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন। নির্বাচনী আইন অনুসারে, ভোটগ্রহণের ২১ দিন আগে থেকে প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন। সে হিসেবে প্রতীক বরাদ্দ না পেলেও দলীয় প্রার্থীরা দলের প্রতীক নিয়ে মাঠে নামার সুবিধা পাচ্ছেন। আগামী ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এরপর ১৪ ডিসেম্বর কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। ওইদিন থেকেই প্রতীক নিয়ে মাঠে নামতে পারবে তারা। এবার দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ায় দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা কার্যত বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। কারণ তারা দলের প্রতীক পাবেন সুতরাং আলাদা করে প্রতীক বরাদ্দের কিছু নেই। ফলে মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই প্রতীক নিয়ে প্রচারণার মাঠে নেমেছেন মেয়র প্রার্থীরা। এ পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়া মেয়র পদে অন্য কোনো দলের বা স্বতন্ত্র প্রার্থী না থাকাই দুই দলের প্রার্থীর মধ্যেই ভোটের লড়াই হবে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আইন মেনে দলীয় প্রার্থীরা বুধবার থেকে প্রতীক নিয়ে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাতে পারলেও কাউন্সিলরদের খালি হাতে যেতে হচ্ছে ভোটারদের কাছে। তাদের আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতীকের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। মির্জাপুর পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর এস এম রাশেদের কাছে নির্বাচনের প্রতীক উটপাখি চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এবারের নির্বাচনে উটপাখি, ডালিম, মুলা, পাঞ্জাবি, পানির বোতলসহ কয়েকটি প্রতীক রাখা হয়েছে। বিগত নির্বাচনে এসব প্রতীক না থাকায় এবারের নির্বাচনে কাউন্সিরর প্রার্থীরা ভোটারদের নজর কারার জন্য উটপাখি চেয়েছেন এবং এই প্রতীকটিই ভোটারদের কাছে বেশি পরিচিতি লাভ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রতীক পাঁচ দিন আগে ও পরে বরাদ্দের বিষয়টি জানতে চাইলে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মো. সিরাজ মিয়া, সাত নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিরর প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আলী আজম খান বলেন, কাউন্সিরর প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার বিষয়ে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। এদিকে সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। প্রতীক হিসেবে ফ্রক, চুড়ি, পুতুল, কাঁচিসহ ১০টি মেয়েলি ও গৃহস্থালি প্রতীক রাখা হয়েছে বলে তিন নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আঙ্গুরী বেগম জানিয়েছেন।  প্রার্থীদের মধ্যে এমন বৈষম্যের সৃষ্টি হলেও সহকারী রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মাসুদ আহমেদ শিকদার বলেন, এতে কাউন্সিলর প্রার্থীদের ‘বিরাট ক্ষতি’ হবে না। পৌর নির্বাচন ব্যাপক এলাকা নিয়ে হয় না। নিজ এলাকায় প্রার্থীদের পরিচিতি থাকে। তাই প্রতীক ছাড়া খুব একটা সমস্যা হবে না। অবশ্য প্রতীক প্রার্থীদের বাড়তি সুবিধা দিয়ে থাকে উল্লেখ করে বলেন ‘এতে বিরাট ক্ষতি হবে না।’এসএস/পিআর

Advertisement