মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করলেও ব্যাংক, বীমা, শেয়ারবাজার, গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা চালু রয়েছে। ফলে কর্মজীবী মানুষগুলোকে প্রতিদিন অফিসে ছুটতে হচ্ছে।
Advertisement
কর্মীদের অফিস যাতায়াতের জন্য কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে। ভাড়া করা বড় বাসও রয়েছে এ তালিকায়। যাদের অফিসের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা নেই তারা কেউ রিকশা, কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ হেঁটে অফিস যাতায়াত করছেন। অবশ্য বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়ি।
অনেকটা অবাধেই চলছে এসব ব্যক্তিগত গাড়ি। এর সঙ্গে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলেও যাত্রী নিয়ে অবাধে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। যেসব এলাকায় বিশেষ অভিযান চলছে না, সেখানে এসব ব্যক্তিগত গাড়ি, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চলাচলে কোনো ধরনের বাধা পেতে দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কয়েকটি বড় বাস যাত্রী নিয়ে ছুটে চলছে। এ বাসগুলো কোনো না কোনো কোম্পানির ভাড়া করা। বড় বাসের পাশাপাশি প্রচুর ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। এমনকি ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলও যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
Advertisement
রামপুরা থেকে মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, কাকরাইল, পল্টন, মতিঝিল এলাকায়ও একই দৃশ্য দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় গাড়ির চাপ কম থাকলেও এসব অঞ্চলে ট্রাফিকের দায়িত্বপালনকারীদের বেশ তৎপর দেখা যায়। তবে কোনো গাড়িতে তল্লাশি করার দৃশ্য দেখা যায়নি। গাড়ি সিগন্যালে থামা অথবা চলাচলের নির্দেশনা দিতে দেখা যায় ট্রাফিক সিগন্যালে দায়িত্বপালনকারীদের।
মতিঝিলের একটি অফিসে চাকরি করেন সাইদুর রহমান। রামপুরার বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে বের হওয়া সাইদুর রহমানের সঙ্গে কথা হয় মালিবাগ আবুল হোটেল সিগন্যালে। তিনি বলেন, ‘লকডাউনের শুরু থেকেই আমাদের অফিস খোলা। প্রতিদিন অফিসে যেতে হয়। এখনো পর্যন্ত যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয়নি। আজও রাস্তায় কোনো সমস্যা দেখছি না। কোনো প্রকার তল্লাশি ছাড়ায় চলাচল করতে পারছি।’
কাকরাইল মোড়ে কথা হয় একটি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানের আওতায় মোটরসাইকেল চালানো আরিফের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পার্সেল ও যাত্রী আনা নেয়ার জন্য আমাদের সেবা চালু রয়েছে। যেখানে বিশেষ অভিযান চলে, সেখানে যাত্রী নিয়ে যেত সমস্যা হয়। তাছাড়া অন্যান্য অঞ্চলে কোনো সমস্যা হয় না। যাত্রীর মাথায় হেলমেট থাকলে ট্রাফিক পুলিশ কোনো বাধা দেয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার পরিবার আছে। আয়ের বিকল্প কোনো উৎস নেই। ফলে বাধ্য হয়েই এই করোনার মধ্যেও মোটরসাইকেলে ভাড়া মারছি। আল্লাহর রহমতে এখনো কোনো সমস্যার মধ্যে পড়িনি। কিন্তু অনেকের কপাল খারাপ, বিশেষ অভিযানের মধ্যে পড়ে যায়। তখন বড় জরিমানা দিতে হয়। আমার পরিচিত দুইজন এমন সমস্যায় পড়েছে।’
Advertisement
মতিঝিলের একটি অফিসের কর্মী নিয়ে চলাচল করা একটি বাসের চালক মো. দিদারুলের সঙ্গে কথা হয় বিজয়নগর মোড়ে। তিনি বলেন, ‘সকালে কর্মীদের নিয়ে অফিসে দিয়ে আসি। আমাদের অফিসের বাহিরের কোনো মানুষ তুলি না। আবার অফিস শেষে যাদের নিয়ে আসি, তাদের নামিয়ে দিয়ে আসি। আমাদের গাড়ি চলাচলে কোনো সমস্যা হয় না।’
এমএএস/এমআরআর/এএসএম