রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বাবার মরদেহ খোলা আকাশের নিচে রেখে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে সালিশে ব্যস্ত পাঁচ সন্তান। কোনো সুরাহা না হওয়ায় মারা যাওয়ার ২২ ঘণ্টা পর বুধবার (৭ জুলাই) পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
Advertisement
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচুরিয়ার অম্বলপুর গ্রামের মৃত সাহাজুদ্দিন মোল্লার ইয়াছিন মোল্লা (৮৫) মারা যান গত মঙ্গলবার। এরপর মরদেহ উঠানে রেখে সন্তানরা সম্পত্তির ভাগ নিয়ে বিতণ্ডা শুরু করেন। পরে মরদেহ পাশে রেখে সালিশ-বৈঠক বসেন স্থানীয়রা। কোনো সুরাহা না হলে ইউপি চেয়ারম্যানকে ডাকা হয়। তিনিও ব্যর্থ হন সমস্যা সমাধানে। পরে পুলিশ এসে মরদেহ নিয়ে যায়।
ইয়াছিন মোল্লার সন্তান বাবলু মোল্লা, ফুলবড়ু, রাবেয়া ও মমতাজ অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ছোট ভাই রহমান মোল্লার কাছে থাকার সুযোগে বাবাকে ফুঁসলিয়ে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেন। এ নিয়ে রাজবাড়ী কোর্টে একটা মামলা করা হয়েছে। সে মামলায় গত ৫ জুলাই (সোমবার) বাবাকে হাজির হতে নির্দেশ দিলেও অসুস্থতার কারণে উপস্থিত হতে পারেননি। অসুস্থ বাবাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে বললেও ছোট ভাই তাদের কথা না শুনে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা করায়।
ইয়াছিন মোল্লার ছোট ছেলে রহমান মোল্লা বলেন, শুক্রবার (২ জুলাই) বাবা অসুস্থ হলে তাকে গোয়ালন্দের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাই। এসময় ডাক্তার কিছু টেস্ট ও ওষুধ লিখে দিয়ে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাতে বলেন। সে অনুযায়ী বাসায় রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে ফের অসুস্থ হলে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
Advertisement
এ বিষয়ে দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। দুপুরে এ ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মৃতের বাড়িতে যাই। সালিশের মাধ্যমে তাদের সমস্যা সমাধান ও মরদেহ দাফনের চেষ্টা করি। মৃতের অন্য সন্তানদের অভিযোগ ছোট ছেলে তাকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে। পরে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করলে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে রাজবাড়ী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রুবেলুর রহমান/আরএইচ/এমএস
Advertisement