চট্টগ্রাম নগরে তিনটি স্থায়ী পশুর হাটের সঙ্গে আরও তিনটি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর অনুমতি পেয়েছে সিটি করপোরেশন (চসিক)। স্থায়ী পশুর হাট সারাবছর চালু থাকলেও অস্থায়ী তিনটি হাট ১২-২১ জুলাই পর্যন্ত বসানোর অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
Advertisement
তবে সরকার আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধি-নিষেধ ঘোষণা করায় নির্ধারিত তারিখে হাট বসানো নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখনো কর্তৃপক্ষ ঊর্ধ্বতন প্রশাসন থেকে নির্দেশনা পাননি বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরে স্থায়ী তিনটি পশুরহাট হচ্ছে—বিবিরহাট, সাগরিকা গরু বাজার ও পোস্তার পাড় ছাগলের হাট। এবারের কোরবানিকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসনের কাছে আরও সাতটি অস্থায়ী পশুরহাট বসানোর অনুমতি চেয়েছিল চসিক। যাচাই-বাছাই শেষে করোনা মহামারির বিষয়টি বিবেচনা করে তিনটি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন।
সেগুলো হলো—নুর নগর হাউজিংয়ের কর্ণফুলী গরুর বাজার, সল্টগোলা রেলক্রসিং সংলগ্ন মাঠ ও কাটগড়ে বাটারফ্লাই পার্ক সংলগ্ন মাঠের হাট।
Advertisement
এবারের পশুর হাট বসানোর ক্ষেত্রে—প্রধান সড়ক থেকে কমপক্ষে ১০০ গজ দূরে সুবিধাজনক স্থানে হাট বসানো, নির্ধারিত বাজারের বাইরে কোনোরকম খুঁটি স্থাপন ও পশু না রাখা, প্রবেশমুখে সাবান-পানি বা জীবাণুনাশক স্প্রে রাখা, প্রবেশপথ ও বের হওয়ার পথ আলাদা রাখা, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের মুখে মাস্ক নিশ্চিত করাসহ মোট ১৭টি শর্তজুড়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, স্থায়ী পশুরহাট প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য ইজারা দেয়া হয়। সে হিসেবে নগরের তিন স্থায়ী পশুরহাট এখন চালু রয়েছে। আবার গত ২৯ জুন জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি পাওয়ার পর তিনটি অস্থায়ী পশুরহাটে এখন ইজারা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে চসিক কার্যালয়ে।
বুধবার (৭ জুলাই) বেলা ১১টা পর্যন্ত তিনটি অস্থায়ী হাটের ইজারার জন্য ৯৬টি দরপত্র বিক্রি হয়েছে। দরপত্র বিক্রি আজ (বুধবার) পর্যন্ত চালু থাকবে। এরপর অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে ইজারাদার নিয়োগ করা হবে।
এদিকে, অস্থায়ী পশুরহাট ১২ জুলাই থেকে বসানোর কথা থাকলেও সরকার ১৪ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করায় নির্ধারিত তারিখে হাট বসানো হবে কি-না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
Advertisement
জানতে চাইলে চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘১২ জুলাই থেকে অস্থায়ী পশুরহাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসন অনুমতি দিয়েছেন। লকডাউনের হাট বসানো যাবে কি-না, এখনো ঊর্ধ্বতন প্রশাসন থেকে কোনো নির্দেশনা পায়নি। যেহেতু কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি, সেহেতু ১২ জুলাই থেকে বাজার বসানোর প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে ভিন্ন কোনো নির্দেশনা পেলে সেভাবে কাজ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘অনুমতি পাওয়া অস্থায়ী পশুর হাটগুলোতে এখন ইজারাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। এখন পর্যন্ত তিনটি হাটের জন্য ৯৬টি দরপত্র বিক্রি হয়েছে। আজ দরপত্র বিক্রি শেষ হবে। বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ইজারাদার নিয়োগ করা হবে।’
সরেজমিন নগরের স্থায়ী ও অস্থায়ী হাট ঘুরে দেখা গেছে, স্থায়ী হাটগুলোতে এখন পর্যন্ত কোরবানি উপলক্ষে তেমন কোনো গরু আসেনি। বাজারে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। অতিরিক্ত গরু রাখার জন্য চালা এবং খুঁটি মেরামত করা হচ্ছে। কোনোটিতে একশ কিংবা কোনোটিতে তার চেয়েও কম গরু রয়েছে। আবার অস্থায়ী অনুমতিপ্রাপ্ত বাজারগুলোতে ইজারাদার নিয়োগ না হওয়ায় এখন খালি মাঠই দেখা গেছে।
বাজারের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সাগরিকা গরু বাজারের ইজারাদার আবুল কালাম আজাদ বাবুল জাগো নিউজকে বলেন, ‘কোরবানির বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। অথচ এখনো বাজারে গরুর সংখ্যা একশোর কম। বেচা-কেনাও নেই। আবার খালি ট্রাক যেতে না পারায় গরু আনা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। সবমিলিয়ে মনে হচ্ছে- এবারে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে।’
মিজানুর রহমান/এএএইচ/জেআইএম