বর্ষা মৌসুমে অনেকেই সর্দি-কাশির সমস্যা ভুগছেন! এ ছাড়াও কোভিড-১৯ এর অন্যতম লক্ষণগুলোর মধ্যে কাশি অন্যতম। যদি আপনি খুশখুশে বা শুষ্ক কাশিতে ভুগে থাকেন; তাহলে ঘরোয়া উপায় মেনে তা সারিয়ে তুলতে পারেন।
Advertisement
সাধারণত কাশি দু’ধরনের হয়ে থাকে- উত্পাদনহীন এবং উত্পাদনশীল। উত্পাদনহীন কাশি সাধারণত শুকনো হয়ে থাকে, অর্থাৎ এর সঙ্গে কফ বা শ্লেষ্মা বের হয় না।
আর উত্পাদনশীল কাশি ফুসফুস পরিষ্কার করার জন্য শ্লেষ্মা বা কফ উত্পাদন করে। খুশখুশে কাশি ফ্লু বা সর্দির কারণে কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকে। যা বেশ কষ্টকর। ধোঁয়া, ধূলিকণা, দূষণ, পরাগ এবং অন্যান্য অ্যালার্জির মতো পরিবেশগত কারণে খুশখুশে কাশি হতে পারে।
এ ছাড়াও হাঁপানি, নিউমোনিয়া, সাইনোসাইটিস, যক্ষা, গ্যাস্ট্রো-এসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (জিইআরডি) এবং আন্তঃদেশীয় ফুসফুস রোগ ইত্যাদি শুকনো কাশি হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। তবে এই কাশি সারাতে ভরসা রাখেতে পারে ঘরোয়া কিছু দাওয়াইয়ে-
Advertisement
মধু
কাশির অন্যতম প্রাচীন ঘরোয়া প্রতিকার হলো মধু। এটি প্রাকৃতিক প্রদাহবিরোধী হিসেবে কাজ করে। এর অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রভাব আছে, যা ক্ষুদ্রতর ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাল সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও মধু খেতে পারে। তবে এটি দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের দেওয়া উচিত নয়। মধু খাওয়ার মুখের লালা গ্রন্থিগুলো বেশি পরিমাণে লালা উৎপাদন, যা গলার শুষ্কভাব দূর করে। এর ফলে কাশিও কমে যায়।
কাশি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রতিদিন এক চামচ মধু অন্তত তিনবার খেতে হবে। আপনি এক কাপ গরম পানিতে বা ভেষজ চায়েও মধু মিশিয়ে দিনে দুবার পান করতে পারেন।
Advertisement
হলুদ
খুশখুশে কাশির আরেক প্রতিকার হলো হলুদ। এতে কারকুমিন থাকে। এ ছাড়াও হলুদে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা শুকনো কাশিসহ শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই
গলার খুশখুশে ভাব কমাতে প্রতিদিন এক চা চামচ হলুদের রস, গরম দুধ বা পানিতে মিশিয়ে রাতে ঘুমানোর আগে পান করতে পারেন। এ ছাড়াও, আপনি দিনে ৫০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ পর্যন্ত হলুদ গুঁড়ো পানিতে গুলিয়ে পান করতে পারেন।
আদা
আদায় আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পাশাপাশি শারীরিক বিভিন্ন প্রদাহ থেকে মুক্তি দেয়। এটি শুষ্ক কাশির কার্যকরী এক ঘরোয়া প্রতিকার।
খুশখুশে কাশি দূর করতে আপনি আদা চা পান করতে পারেন। এ ছাড়াও আপনি আধা চা চামচ আদার গুঁড়ো এক কাপ গরম পানিতে প্রতিদিন তিনবার পান করতে পারেন।
বিকল্পভাবে, এক চামচ আদা রস এবং মধু মিশিয়ে প্রতিদিন দুবার পান করলেও উপকার মিলবে।তবে অত্যাধিক আদা আপনার পেট খারাপ করতে পারে।
বাষ্প নেওয়া
খুশখুশে কাশির সমস্যা কমাতে বাষ্প নিতে পারেন। এর ফলে গলার শুষ্কভাব কমবে পাশিপাশি গলা ব্যথা ও কাশির তীব্রতাও কমতে শুরু করবে। পানিতে সামান্য টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে দিলে আরও ভালো ফল পাবেন।
গরম পানি একটি পাত্রে রেখে, তার উপরে সামান্য ঝুঁকে আপনার মাথার উপর একটি তোয়ালে দিন। পাঁচ মিনিটের জন্য বাষ্প গ্রহণ করুন। এ ছাড়াও আপনি স্টিম বাথ নিতে পারেন।
লবণ পানি গার্গল
ডাক্তাররা সর্বদা গলা ব্যথা কমাতে লবণ পানি গার্গলের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এটি শুকনো কাশি দ্রুত সারায়। লবণাক্ত পানি গ্রহণের ফলে গলার খুশখুশে ভাব কমে আসে। এজন্য এক গ্লাস গরম পানিতে আধা টেবিল চামচ লবণ মিশিয়ে নিন।
সামান্য ঠান্ডা হলে, এই পানি মুখে নিয়ে গলা পর্যন্ত রেখে তারপর আবার বের করে ফেলে দিন। এভাবে কয়েকবার করুন। কাশি কমে না যাওয়া পর্যন্ত একাধিকবার লবণ পানি গার্গল করুন।
ঘরোয়া প্রতিকার গ্রহণের পরেও যদি আপনার কাশি না কমে থাকে; তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বিশেষত যদি সর্দির পাশাপাশি কাশি এবং উচ্চমাত্রায় জ্বর হয়ে থাকে।
সূত্র: হেলথলাইন
জেএমএস/এমকেএইচ