ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাঁদা না পেয়ে করোনা রোগীর লাশ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে চাবি ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) দুপুরের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) জাকিউল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, দুপুরের দিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঝামেলা হয়েছিল। তবে, বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে।
অ্যাম্বুলেন্স চালকদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা নেতাদের দাবি মতো চাঁদা না দেয়ায় দুপুরের দিকে তারা অ্যাম্বুলেন্সের চাবি নিয়ে যান। ফলে লাশ অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পরও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি তারা।
Advertisement
অ্যাম্বুলেন্স চালকদের ভাষ্যমতে, সোমবার (৫ জুলাই) রাতে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের ডেকে নিয়ে কথা বলেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি অনুপম সাহা। তিনি হাসপাতালের লাশ পরিবহনের আগে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কিন্তু লাশ বহনের আগে তাদের সঙ্গে কথা না বলায় দুপুরের দিকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী জরুরি বিভাগের সামনে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের চাবি নিয়ে যান। এ সময় শেরপুর, হালুয়াঘাটসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি লাশ আটকেপড়ে।
এ বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক সুমন মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, দুপুরে ৫ থেকে ৬টি অ্যাম্বুলেন্স করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ ছিল। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ৬টি গাড়ির চাবি নিয়ে যায়। পরে বিকেলের দিকে স্থানীয় কাউন্সিলর ফজলুল হক উজ্জল আমাদের ডেকে নিয়ে চাবি বুঝিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, এ ঘটনার পর বিকেল ৪টার দিকে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শফিকের কাছে চাবি ফেরত দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তবে, বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত চাবি নেবেন না বলে জানান অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর ফজলুল হক উজ্জ্বল চালকদের বুঝিয়ে দেবেন বলে চাবি নিয়ে যান।
জানতে চাইলে ফজলুল হক উজ্জ্বল জাগো নিউজকে বলেন, চাবি অ্যাম্বুলেন্স চালকদের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে, চালকরা আগামীকাল হাসপাতালের পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দিতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Advertisement
এ বিষয়ে চরপাড়া অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সভাপতি সেলিম মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই চাঁদা চেয়ে আসছেন। এরই জেরে আজ দুপুরে করোনার লাশবাহী ৬টি গাড়ি আটকে দেয়। পরে সন্ধ্যার দিকে স্থানীয় কাউন্সিলর চাবি বুজিয়ে দিলে অ্যাম্বুলেন্স চালানো শুরু করেছি। তবে, এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেব বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি অনুপম সাহা জাগো নিউজকে বলেন, দুইদিন আগে রাতের বেলায় চারজন মেডিকেল ছাত্রী কলেজের ভেতরে ঢুকার সময় কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্সচালক তাদের বাজে কথা বলে। বিষয়টি অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সভাপতি সেলিম জানানোর পর তার কিছু করার নেই বলে জানান তিনি।
আপনারা কি অ্যাম্বুলেন্সের চাবি নিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ছাত্রলীগের কেউ চাবি নেয়নি। তারা কৌশলে আমাদের উপর মিথ্যা অপবাদ চাপানোর চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/এমকেএইচ/এমআরএম