ধর্ম

অজুতে প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার নিয়ম

অজু ইবাদত। নামাজসহ ইসলামের অনেক ইবাদতের জন্যই অজু করা ফরজ। কিন্তু অজুতে রয়েছে কিছু নিয়ম। অজুর সময় ধারাবাহিকতা রক্ষা করা, প্রত্যেক অঙ্গ কতবার ধুইতে হবে; তা-ও অনেকে জানেনা।অজু বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য ধারাবাহিকতা জরুরি। আবার প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার সময় কত বার ধুইতে হবে; সে সম্পর্কে হাদিসে ৩টি মত রয়েছে। হাদিসে বর্ণিত মতগুলো তুলে ধরা হলো-

Advertisement

একবারহজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অজুর প্রতিটি অঙ্গ একবার করে ধুয়েছেন।’ (ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, বুখারি)

দুইবারহজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অজুর প্রতিটি অঙ্গ দুইবার ধুয়েছেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

তিনবারহজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অজুর প্রত্যেক অঙ্গ তিনবার করে ধুয়েছেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

Advertisement

অন্য এক বর্ণনায় হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু অজুর প্রতিটি অঙ্গ তিনবার করে ধুয়েছেন।

অজুর অঙ্গগুলো কত ধুবেন? এ হাদিসগুলোর মধ্যে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসটি বেশি বিশুদ্ধ এবং অধিক উত্তম। এ কারণে ওলামায়ে কেরামগণের মতামত হলো-- অজুর অঙ্গগুলো একবার ধুলেও অজু হয়ে যাবে; কিন্তু- অজুর অঙ্গগুলো দুইবার ধোয়া ভালো। আর- অজুর অঙ্গগুলো তিনবার ধোয়া অধিকতর উত্তম।

তিনবারের বেশি ধোয়াঅজুর অঙ্গগুলো তিনবারের বেশি ধোয়াতে কোনো উপকার নেই। হাদিসে এসেছে-হজরত ইবনে মোবারক রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘যে ব্যক্তি অজুর অঙ্গগুলো তিনবারের বেশি ধোয়; আমার ধারণা মতে তার গোনাহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হজরত আহমদ ও ইসহাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহিমা বলেন, ‘যে ব্যক্তি অনিশ্চয়তায় (সন্দেহে) পরে যায়; সে তিনবারের বেশি ধুতে পারবে।’

Advertisement

অজুতে ধারাবাহিকতারাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অজু কেমন ছিল তা হজরত আলি রাদিয়াল্লাহুর দিক-নির্দেশনায় তুলে ধরছি-

হজরত আবু হাইয়্যা রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আমি হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে অজু করতে দেখেছি। (তা হলো)-- তিনি উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুলেন এবং ভালোভাবে পরিষ্কার করলেন;- তিনবার কুলি করলেন;- তিনবার নাকে পানি দিলেন;- তিনবার মুখমণ্ডল ধুলেন;- তিনবার করে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ধুলেন;- একবার মাথা মাসেহ করলেন; এবং- উভয় পা গোছা (টাখনু) পর্যন্ত ধুলেন।এরপর তিনি দাঁড়ালেন এবং অজুর অবশিষ্ট পানি তুলে নিয়ে তা দাঁড়ানো অবস্থায় পান করলেন। অতঃপর তিনি বললেন-‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অজু কিরূপ ছিল তা তোমাদের দেখানোর জন্যই আমি এরূপ করলাম।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ এবং বুখারিতে সংক্ষেপিত)

সুতরাং অজুর ক্ষেত্রে যেহেতু ৩ বার অঙ্গগুলো ধোয়া অধিকতার উত্তম; তাই প্রত্যেক অঙ্গ তিনবার ধোয়াই উচিত।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে অজু সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত নিয়মে অজু করার তাওফিক দান করুন। আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু নির্দেশিত পন্থায় বিশ্বনবির অজুর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমকেএইচ