সবুজ পাহাড়ে কোল ঘেঁষে এঁকেবেঁকে চলেছে এক নতুন সড়ক। কোথাও উঁচু সড়কটি মিশে গেছে দূরের ওই নীল আকাশের সঙ্গে। কোথাও আবার নেমে গেছে পাহাড়ি ঝরনার মতো নিচের দিকে।
Advertisement
রামগড়ের জালিয়াপাড়া সিন্দুকছড়ি হয়ে এই সড়কটি শেষ হয়েছে মহালছড়িতে। তবে পর্যটকদের কাছে এই সড়ক সিন্দুকছড়ি সড়ক নামেই পরিচিত। সিন্দুকছড়ি ভ্রমণে খাগড়াছড়ির প্রবেশমুখেই স্বাগত জানায় অপরূপ সুন্দর চা বাগান।
খাগাড়াছড়ির শহরের মূল ফটক অতিক্রমের পর থেকেই রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ের বিশালতা আপনাকে মুগ্ধ করবে। পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতেই দেখতে পাবেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান বৌদ্ধ মন্দির। যার মূল আকর্ষন ১০০ ফিট উচ্চতার একটি বুদ্ধ মূর্তি।
আঁকাবাঁকা সড়কের সৌন্দর্য উপভোগ করা শুরু করবেন জালিয়াপাড়া বাজারের পর থেকেই। পাহাড়ের প্রতিটা বাঁকে বাঁকে রোমাঞ্চকর অনুভূতি জাগবে। এই সড়কটি মূলত বাইকারদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পাহাড়ি রাস্তা বরাবরই বাইকারদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে।
Advertisement
বান্দরবান এর তিন্দু, ডিম পাহাড় কিংবা রাঙামাটির সাজেক এর সড়কে বাইকারদের ঢল দেখা যায় সবসময়ই। এই সড়কটি নির্মাণ এর দায়িত্বে ছিলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেড এর ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি ১৫.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করে। এই সড়কটি মূলত পাহাড়কে অক্ষত রেখে নির্মাণ করা হয়েছে।
এই সড়ক নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশংসা কুড়িয়েছে সর্বস্তরের মানুষ থেকে। ইউরোপের সড়কের আদলে ড্রেনেজ সিস্টেম প্রয়োগ করা হয়েছে এখানে। যে কারণে সড়কের স্থায়ীত্ব কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে শুরু করেছে এই সড়ককে কেন্দ্র করে। মূলত দূর্গম এই পাহাড়ের বুকে আঁকাবাঁকা সড়ক ভ্রমণে আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখতেই মানুষ এখানে ভিড় জমান।
Advertisement
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, আব্দুল্লাহপুর অথবা গাবতলী বাসষ্ট্যান্ড থেকে শ্যামলী, হানিফ অথবা শান্তি পরিবহনসহ খাগড়াছড়িগামী বাস পেয়ে যাবেন। নন-এসি বাসে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৫২০ টাকা এবং এসি বাস ১০০০-১২০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন।
খাগড়াছড়িগামী বাসে রামগড় অতিক্রম করার পর হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ মোড়ে নেমে যাবেন। সেখান থেকে সিএনজি ভাড়া করে যেতে পারবেন সিন্দুকছড়ি সড়ক ভ্রমণ করতে।
সিন্দুকছড়ি ভ্রমণে কিছু পরামর্শ
সিন্দুকছড়ি সড়ক উদ্বোধন হয়েছে খুব সম্প্রতি। তাই এখনো পর্যটন ব্যবস্থাপনা নেই সেখানে। তাই সন্ধ্যার পর অবস্থান করা ঠিক হবে না।
যেহেতু নতুন সড়ক তাই ব্যক্তিগত গাড়ি, বাইক অথবা খাগড়াছড়ি থেকে জিপ গাড়ি ভাড়া করে যাওয়া উচিত। না হলে অযথা বাড়তি ভাড়া গুণতে হবে। সিন্দুকছড়ি অত্যন্ত দুর্গম এলাকা হওয়ায় একাকী না গিয়ে দলবেঁধে ভ্রমণ করা উচিত।
জেএমএস/জেআইএম