আইন-আদালত

আটকদের জরিমানা ১০০-৩০০, স্বজনদের দিতে হচ্ছে ১২০০-১৫০০

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে চতুর্থ দিনের মতো চলছে সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউন (বিধিনিষেধ)। এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কঠিন অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরিচালিত হচ্ছে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের করা হচ্ছে জরিমানা। এছাড়া আটকও করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের আদালতে তুলে জরিমানাও করা হচ্ছে।

Advertisement

রোববার (৪ জুলাই) বিধিনিষেধের চতুর্থ দিনে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ৬৩৬ জনকে জরিমানা করেছেন। জরিমানার পরিমাণ জনপ্রতি একশ থেকে তিনশ টাকা হলেও আটকদের স্বজনদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে আইনজীবী পরিচয়ে ছয়শ থেকে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে, এমনকি অনেকের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্তও নেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় অনেককে আটক করে রাখারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাধারণত এসব ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের সরাসরি আদালতে হাজির করে পুলিশ। তখন জরিমানা করে ছেড়ে দেন আদালত। এজন্য আইনজীবীও খোঁজেন না অনেকে।

রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সামনে দেখা যায়, আইনজীবীদের পাশাপাশি অনেকে জরিমানার টাকার কাগজ নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন। আইনজীবী পরিচয়ে অনেকে যার কাছ থেকে যেমন পাচ্ছেন তেমন টাকা নিচ্ছেন। এসময় আটক ব্যক্তিদের স্বজনদের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই দেখা যায়নি।

Advertisement

রামপুরা থেকে আসা নাসির উদ্দিন বলেন, আমার ছেলের মুখে মাস্ক না থাকায় গতকাল সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আটক করেন। এরপর আজ ডিএমপি অধ্যাদেশ আইনে আটক দেখিয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে ২০০ টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু আমার কাছ থেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি এক হাজার তিনশ টাকা নেন। টাকা কম দেয়ার কথা বললে আমাকে হুমকি-ধমকি ও গালিগালাজ করেন তিনি।

মুগদা থেকে আসা শায়ের উদ্দিন খান বলেন, আজ সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অকারণে রাস্তায় চলাফেরা করায় আমার ছেলেকে আটক করেন। এরপর ডিএমপির অধ্যাদেশ আইনে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তার ২০০ টাকা জরিমানা করেন আদালত। কিন্তু আইনজীবী পরিচয়ে একজন আমার ছেলেকে বের করতে এক হাজার টাকা নেন। জরিমানা ২০০ টাকা হলেও আমাকে অতিরিক্ত আটশ টাকা দিতে হয়েছে।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরি সম্পাদক শারমিন সুলতানা হ্যাপি বলেন, কঠোর বিধিনিষেধ চলায় অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে আটক হচ্ছেন। এরপর তাদের আদালতে পাঠানো হচ্ছে। আদালত তাদের ক্ষেত্রবিশেষ একশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করেন। কিন্তু এখানে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে কিছু অসাধু লোক আটকদের স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন। আমরা অসাধু লোকজনদের আটক করে সতর্ক করছি। অসাধু লোকজনদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জেএ/এআরএ/এইচএ/জিকেএস

Advertisement