সরকার ঘোষিত চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যে বীমা কোম্পানির অফিস খোলা রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
Advertisement
বীমা কোম্পানির মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ) থেকে বীমা কোম্পানির প্রধান কার্যালয়সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাখা খোলা রাখার দাবি জানানোর পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাদের দাবির প্রতি একমত পোষণ করেছে।
সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বীমা কোম্পানির প্রধান কার্যালয়সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাখা অফিস খোলা রাখার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে আইডিআরএ।
রোববার (৪ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ৩০ জুনের পত্রের বরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক একই তারিখে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ কতিপয় শাখা চালু রাখার নির্দেশনা দিয়েছে।
Advertisement
এতে বলা হয়েছে, দেশের আমদানি-রফতানির জন্য ব্যাংকিং কার্যক্রমের পাশাপাশি বীমা পলিসি ইস্যুও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এছাড়াও লাইফ বীমাকারীর মেয়াদপূর্তির দাবি পরিশোধসহ অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে বীমাকারীর প্রধান কার্যালয়সহ কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ শাখা অফিস খোলা রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইডআরএ-কে অনুরোধ জানিয়েছে। এ বিষয়ে আইডিআরএ একমত পোষণ করে।
৭ জুলাই পর্যন্ত দেশের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখা এবং জীবন বীমাকারীর মেয়াদপূর্তি ও মৃত্যু দাবি যথাসময়ে পরিশোধ এবং স্বাস্থ্য বীমা সেবা প্রদানের স্বার্থে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কার্যালয়সহ বীমাকারীর প্রধান কার্যালয় ও কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ শাখা অফিস সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়ে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত খোলা রাখার বিষয়ে অনুমতি প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বীমা কোম্পানির মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে বিধিনিষেধের মধ্যে বীমা কোম্পানির প্রধান কার্যালয়সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাখা খোলা রাখার জন্য আইডিআরএ চেয়ারম্যানের কাছে দাবি জানানো হয়।
বিআইএ-এর সভাপতি শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষর করা এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধকল্পে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের স্মারকের বরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩০ জুন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য সার্কুলার জারি করেছে। সার্কুলার অনুযায়ী সাপ্তাহিক ছুটির দিন (শুক্র ও শনিবার) এবং রোববার বাদে সপ্তাহের অন্যান্য দিন সীমিত সময়ের জন্য কার্যক্রম সম্পাদিত হবে।
Advertisement
করোনাভাইরাসজনিত রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য সরকারের আরোপিত বিধিনিষেধ চলাকালীন সময়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যবস্থাপনার বিবেচনায় প্রতিটি জেলা সদরে একটি শাখা এবং উপজেলায় ১টি করে শাখা খোলা রাখা হবে।
অন্যান্য সব ব্যাংকের ক্ষেত্রে প্রতি জেলা সদরে একটি শাখা এবং জেলা সদরের বাইরে ব্যাংক ব্যবস্থাপনা বিবেচনায় ২টি শাখা খোলা রাখা যাবে বলে ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে। ব্যাংকের প্রিন্সিপ্যাল/প্রধান শাখা এবং সব বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা সীমিত সংখ্যক অত্যাবশ্যকীয় লোকবলের মাধ্যমে খোলা রাখা হবে।
এসব তথ্য তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, দেশের আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য চালু রাখার জন্য ব্যাংকসমুহের নৌ (কার্গো) কভার নোট এবং পলিসির বিশেষ প্রয়োজন হবে বিধায় নন-লাইফ বীমা কোম্পানির প্রধান কার্যালয়সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাখা কার্যালয় খোলা রাখা আবশ্যক।
এছাড়া লাইফ বীমা কোম্পানির প্রধান কার্যালয় বন্ধ থাকলে মৃত্যুদাবী, মেয়াদোত্তীর্ণ দাবী ও স্বাস্থ্যবীমা সেবা প্রদানে অসুবিধার সৃষ্টি হবে।
এসব বিষয়গুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারটি বিবেচনায় নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখার স্বার্থে (বিশেষ করে ব্যাংকের এলসি খোলার প্রয়োজনে) সকল বীমা কোম্পানির প্রধান কার্যালয়সহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাখা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত জনবল দিয়ে সীমিত সময়ের জন্য খোলা রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
এমএএস/এএএইচ/জিকেএস