করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এ জন্য সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে দলটি। রোববার (৪ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।
Advertisement
গত শনিবার বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার বিষয়াদি তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্ট কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় উক্ত সভায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিএনপি বারবার সতর্ক করবার পরও সরকার সংক্রমণ প্রতিরোধের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারার জন্য সরকারের উদাসীনতা, অযোগ্যতা ও দুর্নীতিকে দায়ী করা হচ্ছে। জেলা সদরে অক্সিজেনের অভাব, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার তীব্র সংকট, শতকরা ৫২ ভাগ জেলা হাসপাতালে কোনো আইসিইউ বেড না থাকা, ওষুধের অপ্রতুলতা ঢাকার বাইরের জনগণের জীবন মারাত্মকভাবে হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থায় নৈরাজ্য ও দুর্নীতি, অন্যদিকে করোনা টিকার দুষ্প্রাপ্যতা কোটি কোটি মানুষের জীবন অনিশ্চিত করেছে। সভা মনে করে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সরকারের উদাসীনতা দায়ী। প্রায় ১৫ মাস সময় নিয়েও সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।’
Advertisement
করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে প্রায় দুই কোটির ওপর মানুষ দরিদ্র হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউন, সাধারণ ছুটি, সীমিত লকডাউন, কঠোর লকডাউনের ফলে মানুষ দরিদ্র হয়েছে। কর্মচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ শ্রমিক। দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক ৮৫ শতাংশ, সংখ্যায় ৫ কোটিরও বেশি প্রকৃত অর্থে কর্মহীন। দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের জন্য সরকার কোনো পরিকল্পিত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘দিন আনে দিন খায় মানুষ, পরিবহন শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, প্রান্তিক কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হকার এরা সবাই কর্মহীন হয়ে পরিবার নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে জীবন কাটাচ্ছে। অথচ সরকার প্রণোদনা বাজেট বরাদ্দেও তাদের জন্য কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারেনি। অবিলম্বে এসব মানুষের জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা প্রদানের দাবি জানায় বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ সভা মনে করে, সম্প্রতি আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে গত জানুয়ারি মাস থেকে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে বিবরণ বেরিয়ে এসেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ধর্ষণ, হত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সাংবাদিক নির্যাতন এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অপব্যবহারে সাংবাদিক নির্যাতনের চিত্র মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। সভা এ বিষয়গুলো নিয়ে যথাযথভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
কেএইচ/জেডএইচ/জেআইএম
Advertisement