কুমিল্লা নগরীতে আবারও ভয়াবহ জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়েছে। মাঝারি বৃষ্টিতেই তলিয়ে গেছে নগরীর প্রধান সড়কগুলো। পানি ঢুকে পড়েছে হাসপাতাল, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় উপাসনালয়সহ মানুষের বাসা-বাড়িতে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে নগর জীবনে।
Advertisement
তবে জলাবদ্ধতার দায় নিতে নারাজ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক)। তাদের দাবি, বর্ষা মৌসুমে খাল দখল করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফোর লেনের কাজ করায় নগরজুড়ে এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (৪ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর প্রধান সড়ক কান্দিরপাড়া থেকে টমছম ব্রিজ পর্যন্ত, সদর হাসাপাতাল, নজরুল অ্যাভিনিউ সড়ক, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড এলাকা, দক্ষিণ নগরীর চর্থা, রেইসকোর্স, ঠাকুরপাড়া ,শাকতলা, চকবাজার থেকে কাপড়িয়াপট্টিসহ বিভিন্ন সড়ক বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে নগরবাসী।
Advertisement
কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, রোববার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়ছে। এসময় মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। তাই চলতি সপ্তাহ এবং আগামী সপ্তাহে মাঝারি ও ভারি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে কুমিল্লা সদর হাসপাতাল জলমগ্ন হওয়ায় জরুরি চিকিৎসাসেবা ছাড়া সব বিভাগকে বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। ফলে ফিরে যেতে দেখা গেছে রোগীদের।
বেবী বেগম নামের এক নারী নগরীর তেলিকোনা থেকে তার মেয়েকে নিয়ে এসেছেন কুমিল্লা সদর হাসপাতালে। সেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতার মধ্যে অনেক কষ্ট করে এসেও ডাক্তার না থাকায় সেবা পাইনি।’
কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. মোবারক হোসেন জানান, সকাল থেকে ভারি বৃষ্টিতে সিভিল সার্জন অফিস ও সদর হাসপাতালে কোমরপানির সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে স্টোরসহ বিভিন্ন রুমে পানি ঢুকে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।
Advertisement
এছাড়া ডাক্তারদের সবার কক্ষে পানি ঢুকে যাওয়ায় জরুরি সেবা ছাড়া বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সদর হাসপাতাল রোডের ফার্নিচার ব্যবসায়ী মারুফ হোসেন জানান, লকডাউনে দোকান বন্ধ ছিল। ভোরে সামান্য বৃষ্টিতে দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে কয়েক লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়েছে।
অন্যদিকে পানি ঢুকেছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড জামে মসজিদেও। জামে মসজিদের ইমাম আব্দুস সালাম বলেন, রোববার ফযরের নামাজ আদায় করা হলেও সকালের বৃষ্টিতে মসজিদের ভেতরে পানি ঢুকে যায়। ফলে যোহরের নামাজ বন্ধ ছিল।
কুসিক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, নগরীতে জলাবদ্ধতা যেন না হয়ে সেজন্য নগরের উন্নয়ন করা হয়েছে। পানি বের হওয়ার জন্য রেইসকোস ও টমছম ব্রিজ খাল রয়েছে নগরীতে। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগ ফোর লেনের কাজ করতে গিয়ে টমছম ব্রিজ খালের মধ্যে মাটি ফেলছে। এতে খাল সরু হয়ে গেছে। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে কাজ না করার জন্য তাদের চিঠি দেয়া হয়েছে।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজা-ই-রাব্বি বলেন, কুসিকের চিঠি পেয়ে ফোর লেনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এসএমএম/এমএস