জাতীয়

পুলিশ দেখলে মাস্ক পরছেন রিকশাচালকরা

রাজধানীর পলাশী মোড় থেকে যাত্রী নিয়ে শাহবাগের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন সেলিম মিয়া। রিকশার যাত্রী মাস্ক পরলেও তিনি পরেননি।

Advertisement

মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে রিকশাচালক সেলিম মিয়ার সহজ স্বীকারোক্তি, ‘পুলিশ দেখলে মাস্ক মুখে দিই। অন্য সময় মুখের নিচে রাখি।’

রোববার (৪ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, শাহবাগ, পুরান ঢাকা, বংশাল, ঢাকা মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ রিকশাচালকই মাস্ক পরছেন না।

অন্যদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের চতুর্থ দিন চলছে। আজও মোড়ে মোড়ে রয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট।

Advertisement

বিভিন্ন মোড়ে দেখা যায়, যাত্রীর জন্য অপেক্ষারত রিকশাচালকরা মাস্ক ছাড়াই যাত্রীদের ডাকাডাকি করছেন। যাত্রী রিকশায় উঠলেও মাস্ক পরতে অনিহা তাদের। তবে মাঝে মাঝে পুলিশের চেকপোস্ট দেখলেই থুতনির নিচ থেকে টেনে মুখে মাস্ক পরছেন।

অথচ ঘর থেকে বাইরে বের হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে পরিপত্র জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ মানুষের এমন উদাসীনতা ও অসচেতনতা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আরও বাড়িয়ে দেবে। তবে নানান ভ্রান্ত ধারণা আর অসচেতনতায় মাস্ক পরছেন না অনেকেই।

হাকিম নামের একজন রিকশাচালক বলেন, ‘আমাগো করোনা ধরব না। এডা বড়লোকের অসুখ। আমরা রিকশা চালায়, এতে পরিশ্রম হয়। করোনা আমগো কাছে আইব না!’

শামসুল আলম নামের আরেক রিকশাচালক বলেন, ‘শুনছি করোনা হইলে মানুষ মরে যায়। আমাগো কি করোনায় ধরবো? আমার তো বহু বছর জ্বরই আসে না। মাস্ক না পরলে মাঝে মাঝে পুলিশ ডিস্টার্ব করে। তাই পুলিশ দেখলে মাস্ক পরি।’

Advertisement

ষাটোর্ধ্ব রিকশাচালক আলম শেখ বলেন, ‘মাস্ক পইরা রিকশা চালাইতে অনেক কষ্ট। দম বন্ধ হয়ে আসে। কিন্তু মাস্ক না পরলে এখন অনেক যাত্রী উঠতে চায় না। তাই নিরুপায় হইয়া পরছি।’

শাহবাগে দায়িত্বরত সার্জেন্ট আব্দুল লতিফ জাগো নিউজকে বলেন, ‘রিকশায় দুজন যাত্রী একসঙ্গে নেয়া নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তবে রিকশাচালকরা মাস্ক পরছেন কি-না সে বিষয়ে যাত্রীদের সচেতন থাকতে হবে।’

নিউমার্কেট চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজীব আহমেদ বলেন, ‘কিছু কিছু রিকশাচালক দূর থেকে দেখা যাচ্ছে মাস্ক পরেননি কিন্তু চেকপোস্টের কাছে এলেই মাস্ক মুখে দিচ্ছেন। এভাবে মাস্ক বার বার খুললে যাত্রীদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে আমরা রিকশাচালকদের সচেতন করছি।’

লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, ‘ধনী-গরিব সবাইকে মাস্ক পরার বিষয়ে নিয়মিত সচেতন করছি। শুরুতে ভ্রান্ত ধারণা ছিল- করোনা শুধু ধনীদের রোগ, কিন্তু তা ঠিক নয়। সচেতন না থাকলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যে কেউ মারা যেতে পারেন। রিকশাচালক যারা মাস্ক পরছেন না, তাদেরকে বিনামূল্যে মাস্ক দেয়া হচ্ছে এবং করোনা সম্পর্কে ধারণা দেয়া হচ্ছে।’

টিটি/এমএইচআর/এমকেএইচ