প্রায় দুই দশক ধরে বাগরাম বিমানঘাঁটি ছিল আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর সদর দফতর। কাবুল থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এই ঘাঁটি থেকেই দক্ষিণ এশীয় দেশটিতে সকল বিমান হামলা ও কৌশলগত কার্যক্রম পরিচালনা করত মার্কিন সেনারা। আফগানিস্তান ছাড়ার অংশ হিসেবে সম্প্রতি সেই ঘাঁটি খালি করে দিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে বাগরাম থেকে বিদায় নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সব সেনা। তবে পড়ে রয়েছে তাদের তৈরি টনকে টন আবর্জনা।
Advertisement
পশ্চিমা বাহিনী আফগানিস্তানের রাজনীতির জন্য কী ভবিষ্যত রেখে যাচ্ছে তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে দেশটি ছাড়ার আগে সেনারা যে বিশাল আবজর্নার স্তূপ রেখে যাচ্ছে, তা পরিবেশের জন্য খুব একটা স্বাস্থ্যকর হবে না সেটি নিশ্চিত।
২০০১ সাল থেকে বাগরামে যুক্তরাষ্ট্রের এক লাখের বেশি সেনা দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের ঘিরে এলাকাটি অনেকটা ছোটখাটো আমেরিকান শহরে পরিণত হয়েছিল। গড়ে উঠেছিল শপিং সেন্টার, ফাস্টফুডের দোকানও। তবে বিদায়বেলায় মার্কিন বাহিনী প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে অথবা স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করছে। কিন্তু ফেলে যাচ্ছে বিপুল আবর্জনা, প্যাকেজিং ও ইলেকট্রনিক বর্জ্য।
ঘাঁটির বাইরে ময়লার এই ভাগাড় অবশ্য স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বিপুল কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। তাদের চোখ তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়াচ্ছে যদি মূল্যবান কিছু মেলে। আবর্জনার মধ্যে খুঁজে পাওয়া জিনিসপত্র বিক্রি করে অনেকে অর্থ উপার্জনেরও চেষ্টা করছেন।
Advertisement
বাগরামের ভবিষ্যৎহিন্দুকুশ পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত বাগরামের সামরিক ঘাঁটি হিসেবে রয়েছে দীর্ঘ ঐতিহ্য। ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তান দখলের পর সোভিয়েত সেনারাও সেটি ব্যবহার করেছিল। এখন অনেকেরই আশঙ্কা, ঘাঁটিটি তালেবান দখল করে নিলে সেটি তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বিজয় হবে।
তাছাড়া মার্কিন বাহিনীর আগমনের পর বাগরাম ঘাঁটিকে কেন্দ্র করে নতুন অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল আশপাশে। ব্যবসা-বাণিজ্যের তাগিদে অনেক আফগান সেখানে বসবাস শুরু করেন। মার্কিন সেনারা চলে যাওয়ার পর নতুন জীবিকার সন্ধান করতে হবে তাদের।
জানা গেছে, মার্কিন বাহিনীর বিদায়ের পর বাগরাম ঘাঁটি আফগান সরকারের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। শনিবার সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন এক আফগান কর্মকর্তা।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে, রয়টার্স
Advertisement
কেএএ/এএসএম