দেশজুড়ে

পাবনায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ২ লাখ ৩৫ হাজার পশু

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পাবনায় বাণিজ্যিকভাবে গরু মোটাতাজাকরণ কাজে নিয়োজিত প্রায় ৪০ হাজার খামারি এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।সব কিছু ঠিক থাকলে এবার জেলায় দুই লক্ষাধিক গরু-ছাগল বিক্রির আশা করছেন খামারিরা। এতে প্রায় ২০০ কোটি টাকার গবাদিপশু বিক্রি হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক গরু খামার গড়ে উঠেছে। গ্রামে গঞ্জে এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে ২-৪টি গরু পালন হচ্ছে না। প্রতি বছর গরু পালন করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছে অনেকেই। শুধু কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে বিগত এক দশকে গরু লালন-পালন ও কেনা-বেচা করছেন হাজার হাজার মানুষ।

বেসরকারি সংস্থা ওসাকার নির্বাহী পরিচালক মাজাহারুল ইসলাম, নিউ এরা ফাউন্ডেশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোস্তাক আহমেদ কিরণ জানান, তাদের সংস্থা থেকে দরিদ্রদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হয় গরু মোটাতাজাকরণের জন্য। আরও কয়েকটি সংস্থা পাবনার দরিদ্র মহিলাদের মধ্যে গরু পালনের জন্য ঋণ বিতরণ করেছে। তারা আসন্ন ঈদে তাদের পশু বিক্রি করবেন।

এসব প্রতিষ্ঠানে সুবিধাভোগীরা জানান, তাদের কোনো মাসিক বা সাপ্তাহিক কিস্তি দিতে হয়নি। এখন গরু বিক্রি করে তারা তাদের কিস্তি শোধ করবেন। গরু পালন ও রোগ বালাই দমনের বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।

Advertisement

পাবনার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের বহলবাড়িয়া গ্রামের আফসার আলী ও বিষ্ণুপুর গ্রামের জালাল উদ্দিন জানান, প্রতি বছর একটি করে গরু লালন-পালন করি। কোরবানির ঈদে প্রায় লাখ টাকায় বিক্রি করি।

পাবনা সদর উপজেলার ভাড়ারা গ্রামের সেলিম উদ্দিন বলেন, এক বছর আগে ২০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনে মোটাতাজা করছি। তিনি সেটি এবার ৬০-৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবো।

ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি গ্রামের হামিদুল ইসলাম মন্টু তার স্ত্রী চম্পা বেগমকে তিনটি গরু কিনে দেন। সেই গরু বিক্রি করে ভাল লাভ হয়। এরপর কেনেন আরও কয়েকটি গরু। এখন খামারটিতে রয়েছে বিভিন্ন জাতের ৪০ টি গরু।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আল-মামুন হোসেন মণ্ডল বলেন, এক যুগ ধরে পাবনায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গরু মোটাতাজাকরণ শুরু হয়েছে। মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন ষাঁড় পালন করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে জেলায় প্রায় ২১ হাজার খামারি রয়েছেন যারা বিভিন্ন ধরনের গবাদি পশু লালন-পালন করছেন। এছাড়াও জেলায় অন্তত ১০ হাজার খামারি ক্ষুদ্র পরিসরে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন। এবার জেলায় এক লাখ ২৫ হাজার গরু কোরবানি হাটে উঠবে। কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য এক লাখ ১৫ হাজার হাজার ছাগল-ভেড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দুই লাখ ৩৫ হাজার থেকে দুই লাখ ৪০ হাজার গরু-ছাগল-ভেড়া বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আমিন ইসলাম জুয়েল/আরএইচ/এমএস