ডা. সেলিনা সুলতানা
Advertisement
মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ১৯৮৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় ২৬ জুনকে মাদকবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরের বছর থেকে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবারের স্লোগান ছিল, ‘মাদক বিষয়ে হইই সচেতন, বাঁচাই প্রজন্ম বাঁচাই জীবন’।
সরকারের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও দেশে মাদকের বিস্তার ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নিত্যনতুন মাদকের বিস্তার বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি কেটামিন, ক্রিস্টাল আইস ও এলএসডির দেশে অনুপ্রবেশ করায় ভাবিয়ে তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে মাদকের ব্যবসা বেড়েছে যার ফলে এর নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন শুধু যে একজন ব্যক্তির সম্ভাবনাময় জীবনকেই ধ্বংস করছে তা-ই নয়; সমাজে, পরিবারে সর্বত্র ফেলছে গাঢ় অপচ্ছায়া। জীবনের কঠিন পরিস্থিতিগুলোর জন্য অনেক সময় শিশু-কিশোরদের দায়ী করা হয়। তবে কেন তারা এ অবস্থায় পড়েছে, সেটি আমরা চিন্তা করি না।
Advertisement
পারিবারিক কলহের চাপে অনেক শিশুর স্বাভাবিক জীবনই অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের ঘটনায় শিশুদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যেসব শিশু মা-বাবার মনোমালিন্য দেখতে দেখতে বড় হয়, তারা হতাশ, অসামাজিক ও সহিংস হয়ে ওঠে।
নানা অনিশ্চয়তায় ভুগতে থাকে তারা। এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয় তাদের মধ্যে। ফলে মনঃসংযোগের ঘাটতিও দেখা দেয় পড়াশোনায় ও কর্মক্ষেত্রে। মানসিক রোগসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীণ হচ্ছে প্রজন্ম। শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় মা-বাবার ভূমিকা অপরিসীম।
শিশুর পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশের জন্য মা-বাবাকেই নিতে হবে সবচেয়ে বড় উদ্যোগ। মা-বাবা ছাড়া শিশুর চারপাশের পরিচিত মানুষরাই তার বিকাশে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এক্ষেত্রে মা-বাবার ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রধান কারণ মা-বাবা সন্তানকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসেন, সর্বদা তাদের মঙ্গল কামনা করেন এবং অন্যদের চেয়ে ভালোভাবে তাদের বুঝতে পারেন।
তাই সন্তানরাও মা-বাবার ওপর ভরসা ও নির্ভর করে। শিশুরা অনেক সময় তাদের বন্ধু-বান্ধব ও ভাই-বোনের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখে। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য শিশুর কাছ থেকে শেখার চেয়ে বড়দের সহযোগিতার মাধ্যমে কোনো কিছু শিখলে শিশুদের বিকাশ বেশি হয়।
Advertisement
বর্তমানে অনেক মা-বাবাকেই জীবিকার জন্য কাজে বের হতে হয়। ফলে শিশুকে দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় তাদের থাকে না। অনেকেই নির্ভর করেন কাজের মানুষের ওপর। এজন্য যতটুকু সময় তারা শিশুর কাছে থাকতে পারেন, সে সময়টাকে মানসম্মত করে তুললে তা শিশুর বিকাশে অনেক অবদান রাখতে পারে।
খেয়াল রাখতে হবে, শিশুর মৌলিক চাহিদাগুলো অপূর্ণ থাকার জন্য কিন্তু তার মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষুন্ন হয়। তাই তার স্বাধীনতার চাহিদা, আত্মস্বীকৃতির চাহিদা, সক্রিয়তার চাহিদা, নিরাপত্তায় চাহিদা প্রভৃতি যাতে তার বাসগৃহ ও বিদ্যালয়ে পূরণ করার সুযোগ পায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, বাসগৃহ ও বিদ্যালয়ের পরিবেশ মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অনুকূল হওয়া খুবই প্রয়োজন। যদি শিশুটিকে বড় করে তোলা হয় গভীর মমতায়, সঠিক বিকাশে, তাহলে সে হয়তো তার পৃথিবীটাকে তার মতো করেই বাসযোগ্য করে তুলবে। সে মনের মতো সাজিয়ে নিবে নিজের পৃথিবীকে।
তবে ভয় দেখিয়ে বা অতিরিক্ত শাসন করলে শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ হয় বাঁধাগ্রস্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের কোনো কাজ করানোর জন্য ভয় দেখালে তা তার মনে গেঁথে যায়। এর ফলে ওই শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয় এবং আত্মবিশ্বাস কমে যায়। এতে শিশুর সৃজনশীলতার বিকাশ ব্যাহত হয়।
তাই শিশুদের কোনোভাবেই ভয় দেখানো উচিত নয়। পারিবারিক কলহের চাপে অনেক শিশুর স্বাভাবিক জীবনই অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা বলেন, ‘শিশুদের ওপর মানসিক আঘাতের প্রভাব অনেক দীর্ঘস্থায়ী ও ক্ষতিকর। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মানসিক আঘাত শিশুর পরবর্তী জীবনকে বাঁধাগ্রস্ত করে আবেগজাত সমস্যায় আক্রান্ত করে।’
সুন্দর জীবনের পথে অত্যন্ত মূল্যবান বক্তব্য হলো ‘অসৎ সঙ্গ পরিত্যাগ করা’। শিশু-কিশোরদের বেড়ে উঠতেই তাদের সঙ্গে সমবয়সী বন্ধু-বান্ধবের যোগাযোগ ঘরে-বাইরে বাড়তে থাকে। পরিবার যদি ঠিকমতো সতর্ক হতে সহায়তা না করে; তাহলে তারা এমন কারও দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে, যাকে ভালো বন্ধু বলে মনে হলেও আসলে সে একটি ‘অসৎ সঙ্গ’।
একজন সত্যিকারের বন্ধু অন্যকে সৎ সহায়তা ও ভাবনা বিনিময়ের মাধ্যমে বড় হয়ে উঠতে সাহায্য করে। পরিবারকে সজাগ হতে হবে নিজেদের আচার-আচরণ, ভাষার ব্যবহার ও সন্তানের বন্ধুদের সম্পর্কে। সন্তানের জীবনে মা-বাবা ছাড়া অবশ্যই কয়েকজন সত্যিকারের বন্ধু ও শিক্ষক থাকবেন; যাদের থেকে মূল্যবোধ ও অন্যান্য বিষয় শিখবে।
শিশুর সঠিক মানসিক বিকাশে পরিবারের গুরুত্ব অনেক। প্রচলিত একটি কথা আছে, শিশুর প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো তার পরিবার। কাজেই একজন শিশুর শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক প্রভৃতি বিকাশগুলো ঘটতে শুরু করে পরিবারের মধ্যেই। এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মানসিক সমস্যা সংক্রামক ব্যাধির মতো ক্রমবর্ধমান।
তাই যদি শিশুকে ছোটবেলা থেকেই পূর্ণ মানসিকতার সুষম বিকাশ ঘটানো যায়; তাহলে সে ভবিষ্যতে বিভিন্ন মানসিক সমস্যার মোকাবিলা করে। একজন সুস্থ সবল সামাজিক মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে। আর শিশর এই মানসিক বিকাশ ঘটে তার পরিবারের মধ্যে থেকে।
বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়া, যন্ত্র নির্ভরতা ও পারস্পরিক সুসম্পর্কের অভাব এসবের কারণে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক ভাবের আদান প্রদান কমে যাচ্ছে। যার প্রভাব সুকোমল শিশুদের মনে পড়ে। ফলে শিশুরা নানাভাবেই বিকৃত মানসিকতার শিকার হয় এবং মোবাইল গেম, ভিডিও গেমে আসক্তি, অসামাজিক ভাবনা, নেশার প্রতি আসক্তি ইত্যাদির কবলে পড়ে।
এসব অনেক সময় বাইরে থেকে শিশুকে দেখে বোঝা যায় না বা বোঝা গেলেও অনেকেই গুরুত্ব দেন না। তবে মনে রাখা দরকার পুষ্টিকর খাবার যেমন শরীরকে সুস্থ রাখে; তেমনি উপযুক্ত পারিবারিক পরিবেশই শিশুর মানসিক গঠনকে সুন্দর করে তোলে। তাই শিশুর মানসিক বিকাশের উপর গুরুত্ব দেওয়া খুব প্রয়োজন।
শিশুর মানসিক বিকাশ সুষম করে তোলা যায় তার পরিবারের মাধ্যমে খোলামেলা আলোচনা করে-
১. মনে রাখা জরুরি যে, মন খুলে আলোচনা করলে মনের গভীরে কোনো ক্ষত জমা থাকে না। একজন মানুষের অনেক অভাব অভিযোগ না পাওয়ার বেদনা থাকতে পারে। পরিবারের প্রতিটি সদস্য যদি নিজেরা খোলামেলা কথা বলে, তাহলে তার প্রভাব শিশুর ওপর পড়তে বাধ্য।
এর ফলে শিশুও তার স্কুলের বন্ধুদের বা শিক্ষক শিক্ষিকাদের সম্পর্কে মনোভাব খোলাখুলি বলবে। যার ফলে তার ভেতরে কোনো লুকোনো আবেগ বা ক্ষত তৈরি হবে না। মাদক সেবন করে তারপর নিজে সমস্যার সমাধান করতে গেলে, সেই সমস্যা কেবল আরও জটিল, কঠিন ও বিধ্বংসী রূপ নেয়।
কোনো সমস্যা মোকাবিলার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে মা-বাবা, কোনো শিক্ষক বা নির্ভরযোগ্য অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে সেটি নিয়ে আলোচনা করা। যার সামর্থ্য আছে সমস্যাটি সমাধানে প্রয়োজনীয় সাহায্য করার।
২. তাদের কল্পনাপ্রবণ মন পাখা বিস্তার করতে পারে গল্পের মাধ্যমে। এর ফলে শিশুর মানসিক শক্তি দৃঢ়তা লাভ করে থাকে।
৩. শিশুর খেলনা হতে হবে আবিষ্কারধর্মী, নাটকীয় ও সৃজনশীল। কোনো কিছু নির্মাণ করা শিশুদের আগ্রহের বিষয়। বয়সভেদে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ উপযোগী খেলনা নির্বাচনে পরিবারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
যে খেলনাগুলো শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে। কখনো কখনো সাধারণ গৃহকাজের সামগ্রীও তাদের মজার খেলার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। রুটি বানানোর সময় একটা আটার গলা দিয়ে বোলো তুমি এটা দিয়ে কী কী বানাতে পারো। দেখা যাবে ওদের কল্পনায় চলে আসছে অনেক কিছু যা তারা বাস্তব রূপ দিতে চেষ্টা করবে।
৪. বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বই পড়ার মাধ্যমে শিশুর মানসিক বিকাশ প্রসারিত হয় এবং মনের ভাব প্রকাশের ক্ষমতা বাড়ে। মাঝে মাঝে নানা ধরণের মজার মজার কাহিনীমূলক বই শিশুদের উপহার দিতে হবে। এতে শিশুদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়বে সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে শিশুর বুদ্ধিমত্তা।
৫. আমরা কিন্তু শিশুদের ইচ্ছা ও ভাবনাগুলোকে অনেক সময় পাত্তা না দিয়ে তাদের ভাবনায় আঘাত করে থাকি। ছোটো বলে তাদের সিদ্ধান্ত বা পরামর্শগুলো নিয়ে ঠাট্টা করে বসি। এতে তার শিশু মন আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ধীরে ধীরে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
শৈশব থেকেই যদি তাদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়; তাদের আলাদা করে মর্যাদা দান করা হয় তবেই সেই শিশুটির চিন্তা ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তারাও অন্যদের সম্মান করতে শিখবে। পরিবারের উচিত শিশুদের কথাগুলো মন দিয়ে শোনা ও বোঝার চেষ্টা করা।
৬. শিল্পচর্চার মাধ্যমে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। ছবি আঁকার মাধ্যমে তার কল্পনা শক্তি যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি গান শোনার মাধ্যমে তার মনের ওপর চাপ অনেকটা কমে যায়।
গান শুনলে মস্তিস্ক থেকে ডোপামিন নামক এক প্রকার হরমোন নিঃসৃত হয় যা শিশুকে উদ্দীপনায় ভরিয়ে রাখে। ফলে শিশুরা অসাধারণভাবে ভাবতে ও চিন্তা করতে শেখে। নতুন নতুন সমস্যা সমাধানে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তাই ছোটবেলা থেকেই ছবিআঁকা ও সংগীতের সাথে পরিচয় করানো উচিত।
৭. চাকরিসূত্রে অনেক অভিভাবককে দিনের অনেকটা সময় কর্মস্থলে কাটাতে হয়। ফলে শিশুরা বাবা মায়ের সঠিক সান্নিধ্য পেয়ে ওঠে না। অনেকেই আবার সারাদিনের কর্মব্যস্ততার ফলে ক্লান্তিবোধ করে, কারো কারো মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় সেই মেজাজ গিয়ে পরে শিশুদের ওপর।
ফলে শিশুরা আরও বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয় ও একাকীত্ব বোধ করে। তার শিশু মনে জেগে ওঠা হাজারো রকম প্রশ্ন তার মনে চাপা পড়ে যায়। ধীরে ধীরে তার মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে থাকে। তাই যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন শিশুদের সাথে একটা কোয়ালিটি টাইম কাটানো উচিত বাবা মায়েদের। পরিবারেরও উচিত তাদের মনের কথা খুলে বলা। ৮. আরও কিছু বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন যেমন ব্যর্থ হলে বা ভুল করলে কখনো শাস্তি দেওয়া কিংবা বকাবকি করা উচিত নয়। যারা নিজেদের অবস্থানের অপব্যবহার করে এবং ভুল আচরণ করে, তারা কেবল শিশুদের চেতনাই নষ্ট করে না; বরং শিশু-কিশোর-তরুণদের সামনে মূল্যবোধের নেতিবাচক আদর্শ গঠন করে।
এতে তাদের গোটা জীবনই ভুল মূল্যবোধ ও নেতিবাচক পথে চালিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। অনেকে আছে যারা বেঁচে থাকার জন্য এবং জীবিকার জন্য বছরের পর বছর ধরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তা ও দেশের অন্যান্য স্থানে বাস করছে ও বিভিন্ন অবস্থার শিকার হচ্ছে। > যদি তারা ‘বাড়ির কাজ’ না করত, বা বিরক্ত করত, তাহলে তাদের মারধর করা হতো অথবা নানা রকম নির্যাতন করা হতো।
> বাড়ি ফিরেও মা-বাবার হাতে একই ধরনের নির্যাতনের শিকার হতো তারা। > তারা রাস্তায় গিয়ে ভিডিও গেম খেলার জন্য অর্থ দিয়ে নেশাদ্রব্য কিনে মাদক সেবন শুরু করে।
> অনেকেই শিশুদের জীবনের মৌলিক ভিত্তি গড়তে সহায়তার নামে কেবল তাদের শিক্ষার বন্দোবস্ত করেছেন। তবে তাদের সঠিক আচার-আচরণ ও মূল্যবোধ, অহিংসা, প্রতিক্রিয়া ও ক্রিয়া শেখাচ্ছেন না। বাস্তবে শিশু সুরক্ষা আইন আছে তবে তার যথাযথ প্রয়োগ নেই সবখানে।
৯. সব সময় মনে রাখতে হবে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যে বন্ধন তাও শিশুর মনকে প্রভাবিত করে। তাই নিজেদের মধ্যে ঝগড়া হলেও তা পরিবারের সদস্যদের বলা উচিত নয়। এটা শিশুরা শিখে যাবে খুব সহজেই। পরবর্তীতে তাদের ক্ষতি হতে পারে।
তবে শুধু রাষ্ট্রকে দোষারোপ করলে চলবে না। পরিবার ও সমাজও শিশু–তরুণদের মাদকাসক্ত হওয়ার জন্য অনেকখানি দায়ী। বাবা-মা সন্তানদের প্রতি প্রকৃত অর্থে দায়িত্বশীল হলে তারা মাদকে আসক্ত হতে পারে না।
সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের উদাসীনতা তাদের মাদকের দিকে ঠেলে দিতে পারে। সামাজিক বৈষম্যের কারণে ও অনেক তরুণ, যুবক হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং মাদক থেকে এর মুক্তি খোঁজে। কাজেই রাষ্ট্রের পাশাপাশি পরিবার ও সমাজকেও সচেতন হতে হবে। সর্বনাশা এই মাদককে রুখতেই হবে।
লেখক: কনসালটেন্ট, চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পেডিয়াট্রিক, স্পেশালিস্ট ইন নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম, বেটার লাইফ হসপিটাল, ঢাকা।
জেএমএস/জিকেএস