কুষ্টিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে করোনা হাসপাতালে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে করোনায় তিনজন ও উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
এদিকে জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪১ দশমিক ৪৮ ভাগ।
শনিবার (৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিকে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে রেকর্ড সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ২৫০ বেডের করোনা ডেডিকেটেড এ হাসপাতালে এখন শয্যার চেয়ে করোনা রোগীর সংখ্যা বেশি। করোনা ও উপসর্গ নিয়ে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭৭ জনে। আগের দিন যেখানে রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪৩ জন।
Advertisement
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, ‘শয্যা না থাকায় রোগীদের বারান্দার মেঝেতে রাখতে হচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে রোগী বাড়ছে। চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া কঠিন হবে।’
অপরদিকে গোটা জুন মাসজুড়ে কুষ্টিয়া জেলায় করোনা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গেল মাসের ৩০ দিনে কুষ্টিয়ায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৭২ জনের। যেখানে জেলায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৮ হাজার ১৮৭ জন। আর এ মাসে করোনায় মারা গেছেন ৯৯ জন। যেখানে জেলায় করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২২১ জনের।
এদিকে রোগীর এ চাপ সামাল দিতে জুন ২৫ থেকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘জুন মাসে জেলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়ংকর হবে এটা আমরা ধারণা করেছিলাম। তবে এত বেশি খারাপ অবস্থা হবে এটি আমাদের ভাবনার বাইরে ছিল। সামাজিক দূরত্ব না মানা ও মাস্ক পরিধান না করায় জেলায় এখন করোনার কমিউনিটি ট্রেনজেকশন দেখা দিয়েছে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া এ থেকে বের হওয়ার কোনো পথ নেই।’
Advertisement
অন্যদিকে, কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৯৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪১ দশমিক ৪৮ ভাগ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় মোট আক্রান্ত ৮ হাজার ২৮২ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৬৮৯ জন। আর করোনায় জেলায় মৃত্যু হয়েছে ২২১ জনের।
নতুন করে শনাক্তদের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় সর্বাধিক ৭৮ জন, দৌলতপুরে একজন, কুমারখালীতে তিনজন, ভেড়ামারায় দুজন, মিরপুরে পাঁচজন ও খোকসায় ছয়জন রয়েছেন।
এছাড়া বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৩৬৮ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে আইসোলেশনে ২৬১ জন ও হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ২ হাজার ১০৭ জন।
আল-মামুন সাগর/এসএমএম/জিকেএস