দেশজুড়ে

অক্সিজেন সঙ্কটে রোগীর মৃত্যু, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

সাতক্ষীরা করোনা ডেডিকেটেড মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন বিপর্যয়ের কারণে বুধবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় সাতজন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. কাজী আরিফ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মারুফ আহমেদ ও সামেক হাসপাতালের ডা. সাইফুল্লাহ। তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এই ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সামেক কর্তৃপক্ষ।

সামেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. কুদরত-ই-খুদা জাগো নিউজকে জানান, বুধবার যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে হঠাৎ করে অক্সিজেনের চাপ কমে যায়। ফলে আইসিইউর মধ্যে চারজন ও সিসিইউতে দুইজনসহ মোট ছয়জন রোগী মারা যায়। অক্সিজেন ঠিক ছিল। অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি ছিল না। তবে কী কারণে অক্সিজেনের প্রেসার কমে গেল, সেটি তদন্তে মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান. কাজী আরিফ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

Advertisement

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হুমায়ুন কবির জাগো নিউজকে জানান, হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন বিপর্যয়ের ঘটনায় তত্ত্বাবধায়ককে আজকের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করবে।

বর্তমানে করোনা ডেডিকেটেড সামেক হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ২৮৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ রয়েছে এই হাসপাতালে। বুধবার বিকাল থেকে অক্সিজেনের চাপ কমতে থাকে। সন্ধ্যা ৬টার পর হঠাৎ করে অক্সিজেন সরবরাহে চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ফলে তীব্র অক্সিজেন সংকটে পড়েন রোগীরা। ঘণ্টা দেড়েক এ অবস্থা বিরাজ করছিল। ফলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ না পেয়ে সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিট থেকে ৭টা ৫৫ মিনিটের মধ্যে পরপর সাতজন রোগী মারা যায়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছয়জনের কথা স্বীকার করেছেন।

এ সময় হাসপাতালের চতুর্থ তলায় আইসিইউ ও সিসিইউর সামনে রোগীর স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে সেখানকার বাতাস। যশোর থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ কারিগরি বিশেষজ্ঞরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ৮টার দিকে সমস্যার সমাধান করেন।

মৃতের স্বজনদের অভিযোগ, অক্সিজেনের অভাবে এসব রোগী মারা গেছেন। তারা দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement

এদিকে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে জেলা নাগরিক কমিটিসহ বিভিন্ন নাগরিক ও সামাজিক সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে।

আহসানুর রাজিব/এএইচ/এআরএ/জিকেএস