দেশজুড়ে

যশোরে মাঠে নামছে ৮ প্লাটুন সেনাবাহিনী ও বিজিবি

যশোরে এক সপ্তাহের লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়নে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি। যশোরের আট উপজেলায় ৮ প্লাটুন সেনাবাহিনী ও ৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পুলিশের শতাধিক চেকপোস্ট বসানো হবে।

Advertisement

বুধবার রাতে লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা করোনা কমিটির জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যশোর সার্কিট হাউজে এই সভা শেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান। যশোর জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, সারা দেশে করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সাতদিনের কঠোর লকডাউন জারি করেছে।

জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী যশোরের জেলা প্রশাসন এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করবে। সে অনুযায়ী যশোরের সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।

বিধিনিষেধ চলাকালীন যশোর জেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে এবং আন্তঃজেলা বাস, ট্রেন ও সকল প্রকার গণপরিবহনসহ সিএনজি, ভ্যান, মোটরসাইকেল, থ্রি-হুইলার, হিউম্যান হলার বন্ধ থাকবে। তবে রোগী পরিবহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, পণ্য বহনকারী ট্রাক এবং জরুরি সেবাদানকারী পরিবহন এই বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে।

Advertisement

এছাড়া যশোরে কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান বেলা ১২ পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে সকল ধরনের দোকানপাট, শপিংমল, হোটেল, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে।

নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে- জরুরি পরিষেবা যেমন- কৃষি উপকরণ, খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য, দুগ্ধ পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা কার্যক্রম, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বেনাপোল স্থলবন্দরে জরুরি আমদানি-রফতানি, নওয়াপাড়া বন্দরের সার সরবরাহসহ অন্যান্য কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, গণমাধ্যম, বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংকসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য এবং সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, স্থানীয় সরকারের অধীন অফিসসমূহ, সরকারি অফিসসমূহ।

অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে।

নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সকল পর্যটনস্থল, পার্ক, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

Advertisement

জনসমাবেশ হয় এমন ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জমায়েত বন্ধ থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ওয়াক্তের নামাজ মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন ও খাদেমসহ সর্বোচ্চ পাঁচজন ও জুম্মার নামাজ সর্বোচ্চ ২০ জন জামাতে আদায় করবেন। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও এর বেশি জমায়েত হওয়া যাবে না।

যশোর জেলা করোনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, ৪৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম রেজা, সেনাবাহিনীর ৯ বেঙ্গল ল্যান্সারের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. তানভীর আলম, ৩৭ বীর'র অধিনায়ক মেজর মো. আরিফুল হক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক হুসাইন শওকত, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সেনাবাহিনী ও বিজিবির প্রতিনিধিবৃন্দ।

মিলন রহমান/জেডএইচ