জাতীয়

কঠোর লকডাউনের আগে পেট্রল পাম্পে ভিড়

বুধবার মধ্যদুপুর। শাহবাগের অদূরে ১৭, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউয়ের মেঘনা মডেল সার্ভিস সেন্টারে পেট্রল কিনতে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন। তার সামনে ৩০-৪০টি মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি। কিছুক্ষণ পর পর একটু করে সামনে এগোতে পারলেও কখন পেট্রল ভরে বাসায় পৌঁছবেন সে চিন্তা করছেন তিনি। কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীকে কিছুক্ষণ পর পর তিনি জিজ্ঞাসা করছিলেন আর কয়জনের পর আসবে তার সিরিয়াল।

Advertisement

এ পাম্পটিতে মোটরসাইকেলের জন্য দুটি সারির একটিতে অকটেন ও আরেকটি পেট্রল এবং পাশেই অন্যান্য গাড়ির জ্বালানি বিক্রি হয়।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শাহাদাত হোসেন জানান, অনেক দিন পর পেট্রল পাম্পে এমন ভিড় দেখছেন। আগামীকাল (১ জুলাই) থেকে সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ায় এত ভিড় বলে মনে হচ্ছে তার।

তিনি বলেন, করোনাকালীন লকডাউনে বিপদ-আপদের সঙ্গী এ মোটরসাইকেল। পরিবার বা স্বজনদের কারও অসুস্থতা কিংবা ব্যবসায়িক কোনো প্রয়োজনে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে বের হবেন। এ পাম্পটির জ্বালানি ভালো বলে তিনি ট্যাংক ফুল করে নিতে এসেছেন।

Advertisement

দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি রোধে বৃহস্পতিবার থেকে সাত দিনের কঠোর লকডাউনকে সামনে রেখে শাহাদাত হোসেনের মতো অসংখ্য মানুষকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, জিপ ও মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে বিভিন্ন পেট্রল পাম্পে ভিড় করতে দেখা গেছে।

একাধিক পেট্রল পাম্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, গত তিন দিনের লকডাউনে তুলনামূলকভাবে জ্বালানি বিক্রি কিছুটা কম হলেও আজ সকাল থেকেই জ্বালানি সংগ্রহে বিভিন্ন যানবাহন চালকদের ভিড় লক্ষ্য করেছেন। যারাই আসছেন তাদের অধিকাংশ এসেই বলছেন, ‘মামা, ট্যাংক ফুল করে দেন।’

মেঘনা মডেল সার্ভিস সেন্টারের ইনচার্জ (সহকারী ব্যবস্থাপক) সৈয়দ আলম জানান, করোনাকালে জ্বালানি তেল বিক্রির পরিমাণ সার্বিকভাবে কমলেও আজ সকাল থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানে যানবাহনের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে পেট্রল ও অকটেন কিনছেন ক্রেতারা।

তিনি জানান, প্রতি ঘণ্টায় এ প্রতিষ্ঠানটিতে গড়ে ১৬০০ থেকে ১৭০০ লিটার জ্বালানি তেল বিক্রি হলেও আজ ঘণ্টায় ২১০০ থেকে ২২০০ লিটার বিক্রি হচ্ছে। আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের কারণে অনেকেই জ্বালানি নিয়ে রাখছেন।

Advertisement

তিনি জানান, সাত দিনের লকডাউনে তাদের পাম্পটি খোলা থাকবে। তবে আগের মতো দীর্ঘ সময় খোলা থাকবে না। সীমিত সময়ের জন্য খোলা থাকবে।

আলাপকালে সৈয়দ আলম আরও জানান, মানসম্পন্ন জ্বালানি তেল বিক্রি করার কারণে তাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম রয়েছে। গত ১৪ জুন বিএসটিআই পরিচালিত অভিযানে তাদের স্টেশনে জ্বালানি তেল পরিমাপে সঠিক পাওয়ায় অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকতারা তাদের ধন্যবাদ জানান। এ নিয়ে বিএসটিআইয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি কাগজও দেখান তিনি।

এমইউ/এমআরআর/এএসএম