ব্যাকটেরিয়ার নাম শুনলেই মানুষ আগে ভয় পেত। এখন আর ভয় নয়, বন্ধু হিসেবে বেসিলাস ব্যাকটেরিয়াকে গ্রহণ করা যাবে। প্রকৃতি হতে শতকরা ৭৬ ভাগ উপকারী এ ব্যাকটেরিয়া সংগ্রহ করে উদ্ভাবনীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে বেগুনের ঢলে পড়া রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৯ জুন) ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার ও প্রয়োগোত্তর ফলাফল নিয়ে এক ব্যতিক্রম ধরনের জাতীয় সেমিনারে এমনটি জানান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) প্রধান গবেষক ড. মুহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন। কৃষিতে উপকারী নভেল বেসিলাসের ব্যবহার ও প্রয়োগের ফলাফল নিয়ে বারি এ জাতীয় পর্যায়ের সেমিনারের আয়োজন করে।
বারি’র মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি আয়োজিত সেমিনারে যুক্ত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার।
সেমিনারের সেশন চেয়ারম্যান ড. সামসুল আলম বলেন, কৃষিতে উপকারী বেসিলাসের ব্যবহার কৃষিবান্ধব, যা একটি ভালো উদ্যোগ। উন্নত দেশের ন্যায় আমরা এখন তা শুরু করেছি। মূলত ব্যাকটেরিয়াগুলো শক্তিশালী পেপ্টাইডোগ্লাইকোনের মাধ্যমে প্রতিকুল অবস্থায় গাছকে খাদ্যরস গ্রহণে সহায়তা করে শক্তিশালী করে এবং এন্টাগনাস্টিক হিসেবে কাজ করে, যার ফলে জীবাণুরা অবস্থান করতে পারে না। ফলে গাছ আর ঢলে পড়ে না।
Advertisement
মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম বলেন, নভেল বেসিলাসের প্রয়োগ একটি নতুন বিষয়, যার ওপর ইতোমধ্যেই কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অনেক পথ এগিয়েছে। আরও জোরালো গবেষণার মাধ্যমে নয়া এই পরিবেশবান্ধব উপকারী ব্যাকটেরিয়ার ওপর জোর দিতে হবে।
তিনি বলেন, দেশব্যাপী এই প্রযুক্তি কৃষকের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দিতে হবে। উপসচিব নাসিমা খনম গবেষণাটি খরা, বন্যা এলাকায়ও ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। প্রধান গবেষক ড. হোসেন বলেন, ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে প্রাণিকুলের মধ্যে মানুষের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি মিল, যা শতকরা ৩৭ ভাগ যেখানে বানরের সঙ্গে মাত্র ছয় ভাগ। সুতরাং বন্ধুপ্রিয় মিলের সাদৃশ্যকে কেন্দ্র করে অঞ্চলভিত্তিক এই গবেষণা কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। উপকারী ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে বেগুনের ঢলে পড়া রোগ দমন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে বড় আকারে বায়ো-সেন্টার করে এ ধরনের কাজকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এর ফলেই ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।
ব্যাকটেরিয়ার জীবন ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ, কালচার, নামকরণ এবং কৃষিতে উপকারী বেসিলাসের ব্যবহার-প্রয়োগ এবং ঢলে পড়া রোগ দমন ব্যবস্থাপনা নিয়ে সেমিনারে আলোচনা করা হয়।
Advertisement
এনএইচ/এআরএ/এএসএম