দেশজুড়ে

রামগড় হানাদার মুক্ত হয় এই দিনে

আজ ৮ ডিসেম্বর। পার্বত্য খাগড়াছড়ির রামগড়ের স্বাধীনতা প্রিয় মানুষের কাছে এক স্মরণীয় দিন। আজকের দিনেই পার্বত্য খাগড়াছড়ির সীমান্তঘেঁষা মহকুমা শহর রামগড় হানাদারমুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে এ দেশের মুক্তিসেনা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। এ দিন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী বাঙালি জনতা ‘জয় বাংলা` স্লোগানে সীমান্ত শহর রামগড় প্রবেশ করে।  ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী মানুষ সীমান্তঘেঁষা মহকুমা শহর রামগড়ে আসতে শুরু করে। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অভ্যর্থনা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তোলা হয়। ধীরে ধীরে ফেনী নদীর তীরে অবস্থিত তৎকালীন মহকুমা শহর রামগড় ১নং সেক্টরের আওতাধীন চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়ে উঠে। রামগড়ের প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবিরে থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে আগস্ট থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে কোণঠাসা করতে থাকেন।আজকের দিনে পড়ন্ত বিকেলে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য প্রয়াত সুলতান আহমেদ মুক্তিকামী বাঙালিদের সঙ্গে নিয়ে রামগড়ের প্রধান ডাকঘরের উপরে লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে রামগড়কে হানাদারমুক্ত ঘোষণা করে।পরবর্তীতে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ শিবির থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে আবারও পাক সেনাদের ওপর আক্রমণ করে। ৭ ডিসেম্বর রাতে এবং ৮ ডিসেম্বর ভোরে ভারতীয় দুটি জঙ্গি বিমান রামগড়ে পাকবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনার উপর দুই দফা সফল হামলা চালিয়ে নির্বিঘ্নে ঘাঁটিতে পৌঁছে রামগড়কে হানাদারমুক্ত করে। প্রতি বছরের এই দিনে রামগড়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক দল উৎসব মুখর পরিবেশে রামগড়ে হানাদার মুক্ত দিবস পালন করে থাকে।এসএস/এমএস

Advertisement