দেশজুড়ে

সুবিধাবঞ্চিত ৪০ শিক্ষার্থীর দুমাসের বেতন দিলেন ডা. তারেক

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে অর্থসঙ্কটে পড়েছেন সিলেটের নিম্ন আয়ের মানুষ। এরমধ্যে ছেলে-মেয়েদের স্কুলের বেতন-ভাতা দরিদ্রদের পরিবারের জন্য বোঝায় পরিণত হয়। এ অবস্থায় সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের শিক্ষকরা।

Advertisement

এমন এক মানবিক আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্কুলটির ষষ্ঠ শ্রেণির ৪০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীর দুই মাসের বেতন দেয়ার ঘোষণা দেন সিলেটের বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ রাগিব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ও শিশুরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. তারেক আজাদ।

সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে নগরের ঘাসিটুলা এলাকায় ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলে গিয়ে তিনি সুবিধাবঞ্চিত ৪০ জন শিক্ষার্থীর দুমাসের বেতন-ভাতার টাকা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মেরিনা জাহানের হাতে তুলে দেন। এ সময় ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের এলিট কমিটির সদস্য, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ ও স্কুল শিক্ষিকা শাহিদা জামান উপস্থিত ছিলেন।

খোঁজ জানা গেছে, এই করোনাকালে সিলেট মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন অসহায় রোগীর ৭৮ হাজার টাকার একটি বিল ডা. মো. তারেক আজাদ নিজের পকেট থেকে পরিশোধ করে দেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নীরবে অসহায় মানুষের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন।

Advertisement

ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের শিক্ষিকা শাহিদা জামান বলেন, ‘আমাদের স্কুলে দীর্ঘদিন ধরে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা বিনা বেতনে লেখাপড়া ও শিক্ষাসামগ্রী পেয়ে আসছিল। কিন্তু বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার ঘোষণা আসায় বিদেশি সহযোগীরা তাদের আর্থিক সহায়তা প্রত্যাহার করে নেন। ফলে স্কুলটির সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের বেতন-ভাতা দিয়ে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। তাই আমরা এই অসহায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখতে সমাজের বিত্তবান মানুষের সহায়তা নিয়ে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পড়ানোর চেষ্টা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মানবিক চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মো. তারেক আজাদ আজ একটি ক্লাসের ৪০ জন শিক্ষার্থীর দুই মাসের বেতন ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে দিয়েছেন। এ খবরে এই সুবিধাবঞ্চিত কিশোরগুলোর অনেক খুশি হয়েছে।’

ইউসেপ ঘাসিটুলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মেরিনা জাহান বলেন, ‘করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকলেও আমাদের শিক্ষকরা অনলাইনে ও অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে পড়াশোনা চালু রেখেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ স্কুলের শিক্ষার্থীদের পড়ার পর তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়। তাদের চাকরি কতটুকু নিরাপদ সেই ফলোআপও করে থাকে ইউসেপ। তাই আমরা ঝড়ে পড়া কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষার মূল স্রোতে এনে এদের বেকারত্ব দূরীকরণে কাজ করি। এ কারণে ইউসেপের এই ভালো উদ্যোগে সহায়তা করার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানাই।’

Advertisement

ছামির মাহমুদ/এসজে/এএসএম