জাতীয়

বিস্ফোরণ : ঢামেকের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ!

ছেলেটির মাথা ব্যান্ডেজে মোড়ানো। মায়ের কাঁধে ভর দিয়ে ব্যথায় গোঙাতে গোঙাতে, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে বেরিয়ে আসে। মুখমণ্ডলজুড়ে রক্তের ছোপ। রোববার (২৭ জুন) রাতে মগবাজারের বিস্ফোরণে আহত হয় আনুমানিক দশ-এগারো বছরের শিশুটি।

Advertisement

তার মায়ের অভিযোগ, দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা না পেয়ে বাইরের কোনো হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে যাচ্ছেন। গণমাধ্যমকর্মীরা তার কাছে আহতাবস্থায় ছেলেকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জরুরি বিভাগের এক কর্মচারীকে পাঁচশ টাকা দিলেও মাথায় ব্যান্ডেজ মুড়িয়ে দেয়া ছাড়া আর কোনো চিকিৎসাই দেননি তিনি।

এরপর ছেলেকে দ্রুত অন্য হাসপাতালে নেয়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা খুঁজতে লাগলেন। রোববার রাত আনুমানিক সোয়া ১০টায় ঢামেকের জরুরি বিভাগের বাইরে এ দৃশ্য চোখে পড়ে। সরেজমিনে দেখা যায়, আহত এ শিশুটি একাই নন, তার মতো আরও কয়েকজন আহতের স্বজনকে সুচিকিৎসা না পেয়ে ঢামেক হাসপাতাল থেকে চলে যেতে দেখা যায়। তাদের কেউ বলেছেন, পঙ্গু হাসপাতালে যাবেন আবার কেউ বলেছেন বেসরকারি কোনো হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। তাদের অভিযোগের ব্যাপারে জরুরি বিভাগে উপস্থিত চিকিৎসক কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি।

রাজধানীর মগবাজারে রোববার রাতে বিস্ফোরণের ঘটনায় শিশু-কিশোরসহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৪০ জনকে ঢামেকের জরুরি বিভাগ এবং ১৭ জনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

ঢামেকের জরুরি বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের নিয়ে স্বজনরা এদিক-সেদিক দৌড়ঝাঁপ করছেন। আহতদের কারো হাত ভেঙে গেছে, কারও আবার মুখের চামড়া ঝলসে গেছে। কারো কারো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। রোগী ও স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যাদেরকে ভর্তি করার প্রয়োজন নেই তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাদের কেউ কেউ চিকিৎসা পায়নি বলে অভিযোগ করতে পারে। এদিকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন রোববার রাতে ব্রিফিং করে জানান, বার্ন ইউনিটে ১৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এমইউ/এআরএ

Advertisement