দেশজুড়ে

দাফনের জায়গা খালি নেই কামালনগর সরকারি কবরস্থানে

সাতক্ষীরার কামালনগর কবরস্থানে জায়গা খালি নেই। প্রতিদিন এ কবরস্থানে দাফন হচ্ছে একাধিক মরদেহ। করোনা পরিস্থিতির কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গভীর রাতেও আসছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির মরদেহ। এছাড়া করোনা উপসর্গে মৃত মরদেহ আসছে প্রতিনিয়ত।

Advertisement

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, জুন মাসের গত ২৬ দিনে সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৯ জন এবং করোনা উপসর্গে ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সরকারি হিসাবের বাইরেও প্রতিদিন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমতাবস্থায় চাপ বেড়েছে সরকারি কবরস্থানের ওপর। ফলে সেখানে কবর খুঁড়লেই বেরিয়ে আসছে তাজা মরদেহ। স্বজনদের মরদেহ দাফন নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয়রা।

কামালনগর কবরস্থান পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আমিরুজ্জামান বাবু জাগো নিউজকে বলেন, দেড়শ’ বছর আগের এ কবরস্থানটি ৭০ শতক জমির উপর অবস্থিত। মুন্সি আব্দুর রব সরদার এ কবরস্থানটি এলাকার মানুষের দাফনের জন্য দান করেছিলেন। এরপর থেকে এখানে হাজারো মানুষের দাফন হয়েছে। দিনে দিনে বাড়তে থাকে জনসংখ্যা। এরমধ্যে সাতক্ষীরা পৌরসভা কবরস্থানটি নিজেদের আয়ত্তে নেয়। কিন্তু সাতক্ষীরা পৌরসভা কবরস্থানটির সম্প্রসারণ করতে পারেনি। ফলে একই কবরের ওপর নতুন কবর দিয়ে এ যাবত সমস্যার সমাধান করা হচ্ছিল।

Advertisement

তিনি বলেন, সম্প্রতি করোনাভাইরাস জনিত কারণে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় নতুন কবরে ভরে যাচ্ছে কবরস্থান। ফলে সম্প্রতি কবর দেয়া স্থানে নতুন কবর খুঁড়লেই বেরিয়ে আসছে তাজা মরদেহ। এতে করে কবরস্থানটি সম্প্রসারণ করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

কামালনগর কবরস্থানের গোরখোদক মো. রেজাউল ইসলাম ও মো. ওয়াজেদ আলী জানান, এখানে তারা ১৫-২০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন। এর আগে কবর খুঁড়লে পুরনো হাড়গোড় বের হতো। কিন্তু সম্প্রতি তারা লক্ষ্য করছেন কবর খুঁড়তেই বেরিয়ে আসছে তাজা মরদেহ। করোনার আগে সপ্তাহে দু-একটি, মাসে ১০-১২টি এবং বছরে এক-দেড়শ’ লাশ দাফন করা হতো। কিন্তু মৃতের সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। গত একমাসে প্রায় ৭০-৮০টি লাশ দাফন হয়েছে বলে জানা গোরখোদকরা।

সাতক্ষীরার কামালনগর কবরস্থান পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ডা. আবুল কালাম বাবলা জাগো নিউজকে বলেন, মরদেহের চাপে কামালনগর কবরস্থানে খালি জায়গা নেই। গত ৯ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ২৬টি মরদেহ দাফন হয়েছে। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় তিন কোটি টাকায় দুই বিঘা জমি ক্রয়ের জন্য জমির মালিকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। সাতক্ষীরা পৌর এলাকার সব মসজিদের ইমাম, খতিব, ধনাঢ্য দানশীল ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কবরস্থান সম্প্রসারণে জমি কেনার ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে আর্থিক সংকটের কারণে এখনো সেটি করা যায়নি।

Advertisement

আহসানুর রহমান রাজীব/আরএইচ/এমকেএইচ